ঢাকা: ২০০৯ সালের এই দিনে (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পিলখানাস্থ বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দপ্তরে ঘটেছিলো এক মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞ। বিদ্রোহের ঘটনায় কেড়ে নিয়েছিলো ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনের তাজা প্রাণ।
বিদ্রোহ হওয়ার পরে ক্রমে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীটির নাম পরিবর্তন করা হয়। পোশাকে আনা হয় পরিবর্তন। আন্তঃবাহিনীর অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বিধান রেখে সংস্কার করা হয় আইন।
বাহিনীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বাংলানিউজ একটি এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকার নেয় বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদের কাছ থেকে।
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিজিবির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বাহিনী প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, সেই সময়ে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছিলো সেটির বিচার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বিচার কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, তৎকালীন বিডিআর আইনের মামলায় বিদ্রোহের সঙ্গে সম্পৃক্ত যারা আসামি ছিলেন তাদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। আর বাকি কিছু সংখ্যককে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হয়েছে। এর মধ্যে এই বিশেষ ট্রাইব্যুনাল যাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন তারা হাইকোর্টে আপিল করেছেন।
তিনি আরো বলেন, শুধু বিডিআর বিদ্রোহের বিচারের জন্য হাইকোর্টের আলাদা একটি আপিল বিভাগ কাজ করছেন। একের পর এক এই সংক্রান্তে আপিল বিভাগে শুনানিও হচ্ছে। অতএব অপরাধীরা যেহেতু বিচারের আওতায় এসেছে তাই বলা যায় বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে।
বিদ্রোহের মামলায় এমন অনেকেই থাকতে পারেন যারা নিরপরাধী তাদের ব্যাপারে বিজিবি মহাপরিচালক আজিজ আহমেদ বলেন, এই ঘটনার মামলায় যারা নিরপরাধী তাদেরকে যাচাই-বাছাই করে আন্তঃবাহিনী ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালের আদালত মুক্তি দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে।
আজিজ আহমেদে বলেন, বিদ্রোহের কালো অধ্যায় পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি এবং যেতেই হবে। কারণ এই বাহিনীর ওপর দেশের প্রত্যাশা অনেক বেশি। দেশের পুরো সীমান্ত এই বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল। তাই দায়িত্বটা অনেক বেশি ও গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৩ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিজিবিকে আরো আধুনিক করা হয়েছে বলে জানালেন বাহিনীর মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের নির্বাচনের পর বিজিবিকে আরো পরিকল্পিতভাবে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। যেটি এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
ভবিষ্যতে অনভিপ্রেত ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে পদক্ষেপের ব্যাপারে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, এই বিষয়ে আমি তিনটি মেজর (মূল) কার্যক্রমের কথা বলবো। প্রথমে, যারা এই বিদ্রোহের সঙ্গে সরাসরি জড়িত তাদের বিচারকার্য যথাযথভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। যারা অপরাধী শাস্তিভোগ করছে, অনেকে অপরাধের মাত্রায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের আপিলের ভিত্তিতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কাজ করে যাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, তৎকালীন বিডিআর আইনের যত দুর্বলতা ছিলো সেই সব সংস্কার করে বিজিবি আইন প্রনয়ণ করা হয়েছে। তৃতীয়ত, বিদ্রোহের সম্ভাব্য কারণগুলো খুঁজে বের করে সমাধান করা হয়েছে এবং করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে বিজিবি সদস্যদের ওয়েলফেয়ার দেখা, প্রফেশনাল সাইটে মনোযোগ দেওয়ার জন্য যেসব চাহিদা পূরণ করা দরকার তা পূরণ করা হচ্ছে। মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫