রংপুর: পিকনিকের টাকা না দিতে পারায় রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের গুটিরডাঙ্গা হাইস্কুলের ১৭ শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা একত্র হয়ে স্কুল ঘেরাও করে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এরআগে মঙ্গলবার ওই শিক্ষার্থীরা পিকনিকের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সহকারী শিক্ষক একরামুল হক তাদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। এতে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মনিরা খাতুনকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়।
স্কুল সূত্র জানায়, প্রায় মাসখানেক আগে স্কুল কর্তৃপক্ষ পিকনিকের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দুইশ টাকা করে আনতে বলে। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থীদের পক্ষে সেই টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এতে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের টাকা তোলার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক একরামুল হক ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার ১৭ শিক্ষার্থীকে স্কুলমাঠে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে আমগাছের ডাল দিয়ে বেদম পেটান।
এতে শিক্ষার্থীরা মারাত্মক আহত হলে তাৎক্ষণিকভাবে এলাকার লোকজন তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এদের মধ্যে মনিরা খাতুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার সকালে স্কুল ঘেরাও করেন। এ সময় বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলতাব হোসেন অভিভাবকদের শান্ত করার চেষ্টা করলে অভিভাবকরা আরো বিক্ষুব্ধ ও মারমুখী হয়ে ওঠেন।
অবস্থা বেগতিক দেখে সভাপতি আলতাব হোসেন শিক্ষকদের অফিস কক্ষে আশ্রয় নিলে অভিভাবকরা সভাপতিসহ সব শিক্ষককে সেখানে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তারা মুক্তি পান।
এ ব্যাপারে বদরগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও-ভূমি) কমল কুমার ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এসএম শহিদুল ইসলাম বলেন, দায়ী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক একরামুল হক বলেন, পিটুনির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের টাকা আনার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে মাত্র।
আহত শিক্ষার্থী মনিরা খাতুনের বাবা বলেন, ‘মুই গরিব মানুষ। সবজি ব্যাচে খাও। মুই ২০০ টাকা কোনঠে পাইম। ’ তিনি ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি করেন।
এদিকে, হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আয়েশা সিদ্দিকা জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া মনিরার বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫