ঢাকা: যুক্তিবাদী লেখক অভিজিৎ রায়ের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
শুক্রবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনের সভাপতি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
এতে বলা হয়-মুক্তমনা ওয়েব সাইটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, যুক্তিবাদী তরুণ লেখক অভিজিৎ রায়ের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে আমরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী জঙ্গি মৌলবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিজিৎ রায় ও তার পিতা মানবাধিকার আন্দোলনের পুরোগামী নেতা অধ্যাপক অজয় রায়ের বিরুদ্ধে তাদের বিভিন্ন পুস্তিকা ও প্রকাশনায় ধারাবাহিকভাবে বিষেদগার করে আসছে।
মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী নাগরিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১২ সালে ‘মুক্তমনা’ ওয়েব সাইটকে জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক প্রদান করে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, মৌলবাদীরা ২০০৪ সালে বইমেলায় প্রথাবিরোধী লেখক অধ্যাপক হুমায়ূন আজাদের ওপর চাপাতি দিয়ে যেভাবে হামলা করেছিল, একইভাবে তারা অভিজিৎ রায়কে হত্যা ও তার সহধর্মিনী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে গুরুতর জখম করেছে।
এগারো বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও অধ্যাপক হুমায়ূন আজাদ হত্যার বিচার হয়নি। ১৯৯৯ সালে কবি শামসুর রাহমানের উপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী জঙ্গি মৌলবাদীরা যাদের হত্যা করেছে শতকরা দশ ভাগেরও বিচার হয়নি। বিচার না হওয়া ও বিএনপির মতো বড় দলের ছত্রছায়ায় থেকে জামায়াত ও জঙ্গি মৌলবাদীদের দেশ ও জাতিবিরোধী এবং মুক্তচিন্তা, মানবাধিকার ও সভ্যতাবিরোধী নৃশংস কর্মকাণ্ড সহ্যের সব সীমা অতিক্রম করেছে বলেও বিবৃতে উল্লেখ করা হয়।
অভিজিৎ রায়ের আত্মস্বীকৃত ঘাতকদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি অধ্যাপক হুমায়ূন আজাদসহ ২০০১ সাল থেকে জামায়াত-বিএনপির ‘সন্ত্রাসীরা’ যে সব বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, বিচারক, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, সংস্কৃতিকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করেছে তাদের সবার বিচার ও শাস্তি দাবি করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
একই সঙ্গে সব ‘মৌলবাদী’ সন্ত্রাসী গঠনের ‘মাতৃসংগঠন’ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিসহ সব কর্মকাণ্ড অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন তারা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘অকুতোভয় লেখক অভিজিৎ রায়ের অকাল মৃত্যুতে মুক্তচিন্তার জগতে যে শূণ্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পূরণ হবে না। আমরা তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যসহ মুক্তমনা পরিবারের সকল সদস্যের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫