ঢাকা: নির্মাণ সমাপ্তির পথে থাকা বিরুলিয়া সেতুর ওপর ত্রিপল দিয়ে টাঙানো সামিয়ানার নিচে বসে আছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দুইপাশে দুই সংসদ।
সূর্য তখন মাঝ আকাশের কাছে। মন্ত্রী সবে পরিদর্শন করে এসেছেন সেতুর নির্মাণ-অবশিষ্ট ও অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ।
সামিয়ানার নিচে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিলেন মন্ত্রী। কড়া রোদ থেকে সাময়িক অবস্থান নেওয়া মন্ত্রীর সামনে এ সময় হঠাৎ করেই উপস্থিত হলেন এক ঝাঁক সাংবাদিক; বিশেষ করে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সংবাদকর্মীরা।
মন্ত্রীর বক্তব্য ধারণ করতে ক্যামেরা প্রস্তুতির পাশাপাশি তার সামনে বুমগুলো রাখতেই ইঁতিউঁতি তাকালেন মন্ত্রী! বেশ অস্বস্তি চোখেমুখে। বিরক্তমাখা মুখে এক পর্যায়ে বলেই ফেললেন, আমার পেছনে ব্রাকেট বন্দি কেউ নেই তো! সবার মুখ চাওয়া-চাওয়ি। মন্ত্রীর সামনে-পেছনে যারা ছিলেন, তাদের কেউ কেউ ফিস ফিস করছেন। কেউবা আবার বললেন, ভাই, ব্রাকেটবন্দি কী? উত্তরও ফিস ফিস আওয়াজে।
আরে, জানেন নাহ, ব্রাকেটবন্দি হলো, পুলিশের খাতায় ওয়ান্টেড, দাগী আসামি কিংবা সমাজবিরোধী। দেখেন নাহ, টিভিতে কিংবা খবরের কাগজে ভিআইপিদের পেছন থাকা দাগী কিংবা বিতর্কিতদের যেভাবে গোল বৃত্তাকারে নির্দিষ্ট করে দেয়, সেটাই হচ্ছে ব্রাকেটবন্দি!
এ সময় সাভারের সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান জানান, এখানে ব্রাকেটবন্দি কেউ নেই। সবাই ফ্রেস!
জবাবে মন্ত্রীর তাৎক্ষণিক জবাব- আমি ফ্রেস চিনি। আমাকে ফ্রেস চেনাবেন না। আপনি নতুন এসেছেন। কে দলের নাম ভাঙিয়ে কী করে, আমাদের জানা আছে!
তিনি বলেন, আমার মন্ত্রণালয়ের সড়ক-মহাসড়ক দখল করে যারা দোকান-ব্যবসা, প্রতিষ্ঠান বসিয়েছে, তারা সবাই দলেরই লোক। যারা দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করে, অপরাধ করে বেড়ায়, তারা কখনোই ফ্রেস হতে পারে না। আমি এগুলো পছন্দ করি না।
তিনি বলেন, আমি চাই না, আমার আগেপিছে কোনো ব্রাকেটবন্দি লোক থাকুক!
পরে মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা বাংলানিউজকে জানান, ‘ফ্রেস’ চেনা নিয়ে মন্ত্রীর মন্তব্য ছিল তাৎপর্যপূর্ণ।
তিনি বলেন, মন্ত্রীর পেছনে আমাদের দলের এমন একজন ছিলেন যিনি বিতর্কিত, জনসাধারণের কাছে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে পরিচিত ও বেশকিছু মামলার আসামি। হয়ত তাকে ইঙ্গিত করেই মন্ত্রী এ কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৫