ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মেঘনা-তেঁতুলিয়ার ১৯০ কিমি নদীতে ২ মাস মাছ শিকার নিষিদ্ধ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৫
মেঘনা-তেঁতুলিয়ার ১৯০ কিমি নদীতে ২ মাস মাছ শিকার নিষিদ্ধ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মেঘনা নদীর চাঁদপুরের মতলব (উত্তর) উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এবং ভোলা সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর ইলিশার শাহবাজপুর চ্যানেলের পটুয়াখালীর চর রুস্তম পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার নদীতে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে।
 
১ মার্চ (রোববার) থেকে ৩১ এপ্রিল পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।

এ সময়ের মধ্যে নিষিদ্ধ এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা, জাল ফেলা, মাছ ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে।
 
দেশের ইলিশ সম্পদ রক্ষা, উৎপাদন বাড়ানো এবং সংরক্ষণের লক্ষে প্রত্যেক বছর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে প্রথমবার কেউ নদীতে জাল ফেললে এক মাস হতে সর্বোচ্চ ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা এবং পরবর্তী প্রতিবার আইন ভঙ্গের জন্য কমপক্ষে ২ মাস হতে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২ হাজার টাকা জরিমানার দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারে প্রশাসন।
 
নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে জেলে ও তাদের পরিবারকে চাল, নগদ টাকা দেওয়াসহ পুনর্বাসনের আওতায় আনা এবং গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, ভ্যানগাড়িসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা হয়।
 
চাঁদপুর ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট জানান, নিষেধাজ্ঞা চলাকবালীন সময়ে সরকারি সহযোগিতা আরো বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে জেলেরা। এছাড়া, ইতোমধ্যে মৎস্য বিভাগ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখতে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছে।
 
চাঁদপুরের জেলে বিল্লাল ঢালী, আলম বেপারী ও খলিল মিয়াসহ কয়েকজন জেলে বাংলানিউজকে জানান, কষ্ট হলেও আমরা নদীতে নামবো না। তবে সরকারি সহযোগিতা বাড়ানোসহ অন্য জেলা থেকে যারা এ নদীতে মাছ ধরতে আসে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
 
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়া জানান, এ সময়ে ম্যানেজ  প্রক্রিয়ায় একটি অসাধু চক্র জাটকা নিধনে মেতে উঠে। তাদের চিহ্নিত করে জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষা করার দাবি জানান এ মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা।
 
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুর রহমান জানান, অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন স্থানে জনসচেতনামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে আসছে। এছাড়া জেলেরা প্রতিজ্ঞা করেছে এ দুই মাস তারা নদীতে নামবে না। প্রত্যেক জেলেকে  মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। শিগগিরই তা জেলেদের হাতে পৌঁছে যাবে।
 
সরকারি হিসেবে চাঁদপুরে ২৮ হাজার ৯ ৬৭ জন  জেলে রয়েছেন। তবে, মানবিক সহায়তার জন্য এ বছর ৩৬ হাজার ৫শ ১৫ জনের নামের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
 
ভোলা করেসপন্ডেন্ট জানান, নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের লক্ষ্যে শনিবার দিনভর মেঘনার বিভিন্ন পয়েন্ট ও মৎস্যঘাটগুলোতে সচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ ও মাইকিং করা হয়েছে।  
 
ভোলা জেলায় মোট নিবন্ধনকৃত জেলে রয়েছেন ৮৮ হাজার ১২৮ জন। তবে সরকারি চাল পাচ্ছেন ৫২ হাজার ১৫০ জেলে। এতে বরাদ্দকৃত চাল সবার ভাগ্যে জুটছে না। ফলে চরম অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়েছেন ৩৬ হাজার জেলে। কিভাবে দিন কাটবে সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
 
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মল্লিক জানান, বিকল্প হিসেবে জেলেদের জন্য চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে সব নিবন্ধনকৃত জেলে এ সুবিধা পাচ্ছেন না। কারণ সরকার থেকে ৫২ হাজার ১৫০ জেলেকে এর আওতায় আনা হয়েছে। উপজেলা ভিত্তিক তালিকা তৈরির মাধ্যমে জেলে পরিবার প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে মোট চার মাস চাল দেওয়া হবে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।