ঢাকা: বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রতি জোর দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। একইসঙ্গে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়েছে ইইউ।
ঢাকাস্থ ইউরোপীয় ইউনিয়ন কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে ২০০১ সালের করা সহযোগিতা চুক্তির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের তিনটি সাব-গ্রুপ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে গত ২৬ ও ২৭ শে ফেব্রুয়ারি বৈঠক হয়। বৈঠকে সুশাসন, মানবাধিকার, অভিবাসন বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ-ইইউ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানবাধিকার একটি অন্যতম ভিত্তি উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, সম্প্রতি সহিংসতায় শিকার হওয়া সাধারণ জনগণ যথাযথ বিচার প্রাপ্য। অপরাধী যারাই হোক না কেন, তাদেরকে চিহ্নত করে সুষ্ঠু বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে ইইউ সাব-গ্রুপ গণতন্ত্র, সুশাসন এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে সহযোগিতার কথা জানায়। বিশেষ করে বিচারিক কাজে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ড বাস্তবায়নের কথা বলেছে।
এছাড়া সুশাসন, আইনের শাসন, বিচার বর্হিভুত হত্যার জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সমাবেশ করতে দেওয়া ও নাগরিক সমাজের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার, পাবর্ত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন, নারী ও শিশু অধিকার নিশ্চিত, রোহিঙ্গা ইস্যু, মৃতুদণ্ড এবং অভিবাসনের মত অভিন্ন স্বার্থ জড়িতের বিষয়গুলোতে উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এছাড়া মানবাধিকার কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়েও আবারো গুরুত্বারোপ করে ইইউ।
বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য রাষ্ট্র। ফলে মানবাধিকার উন্নয়ন এবং রক্ষায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আরো গভীরভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ইইউ মানবাধিকার ইস্যুতে আরো আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
এছাড়া বাণিজ্য বিষয়ক সাব-গ্রুপ বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউ গত তিন বছরের বাণিজ্যের বিষয়গুলো তুলে ধরেছে। বৈঠকে ‘ইইউ বিজনেস কাউন্সিল বাংলাদেশে’র করা প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়েছে। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নতি।
পাশাপাশি বাংলাদেশের উন্নয়নে ইইউ আরো সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছে। এ সময়ে নতুন করে ৬৯ কোটি ইউরো ডলার অনুদান দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এ অনুদান গণতান্ত্রিক সুশাসন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা, শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৫