রাজশাহী: রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল গফুরকে হত্যার পর রাজধানীর আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দুপুরে পবা থানা পুলিশের একটি দল কথিত চিকিৎসক জান্নাতুন সালমা মীমের তথ্য মতে তাকে নিয়ে আজিমপুর গোরস্থান থেকে লাশটি উদ্ধার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পবা থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, আজিমপুর গোরস্থানের নিবন্ধন খাতায় মেয়র গফুরের মৃত্যু ৩ জানুয়ারি ও দাফন ৬ জানুয়ারি উল্লেখ করা হয়েছে।
‘পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মেয়র আবদুল গফুরকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন মীম। তবে পরপর দুদিন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেওয়ার সময় বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি,’—জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আবুল কালাম আজাদ জানান, আদালতে বিষয়টি অস্বীকার করায় সোমবার (২ মার্চ) দ্বিতীয় দফায় আরও সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে মীমকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয় পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে আজিমপুর গোরস্থানে মীমকে নিয়ে উপস্থিত হলে মেয়র গফুরের মরদেহ দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোরস্থানের তত্ত্বাবধায়ক। মীম গোরস্থানে মেয়র গফুরকে তার ভাই হিসেবে পরিচয় দেন।
এলাকার স্থানীয় ইমাম হাফিজুল ইসলাম পুলিশকে জানিয়েছেন, মীম তাদেরকে জানান ৩ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ভাই আবদুল গফুর মারা গেছেন। এ ব্যাপারে হাসপাতালের একটি মৃত্যু সনদও দেখান।
পরে ৬ জানুয়ারি জানাযা শেষে আজিমপুর গোরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়। তবে ওই মৃত্যুর সনদ বর্তমানে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন মীম। তাই ধারণা করা হচ্ছে হত্যার পর ভুয়া মৃত্যু সনদ দেখিয়ে কৌশলে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি (তদন্ত) জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে আগামীকাল বুধবার (৪ মার্চ) তারা মরদেহ নিয়ে রাজশাহী ফিরবেন। এর পর হত্যার রহস্য জানাবেন।
নওহাটা পৌরসভার মেয়র গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ২ জানুয়ারি পর্যন্ত পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সারাসরি যোগাযোগ করেন। ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত তার মোবাইল থেকে বিভিন্ন মোবাইলে ম্যাসেজ আসতে থাকে।
কিন্তু ফোন দিলে পরক্ষণেই মেয়রের মোবাইলের সুইচ অফ পাওয়া যায়। শেষ ম্যাসেজে বলা হয়, এখন আমাকে হারালে। এরপর ১৯ জানুয়ারি মেয়রের স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা পারুল বাদী হয়ে পবা থানায় অপহরণের মামলা করেন। পরে থানায় দায়ের করা মামলার সূত্র ধরে কথিত চিকিৎসক জান্নাতুন সালমা মীমকে ঢাকা থেকে আটক করা হয়।
৩১ জানুয়ারি মীমের দুইবোন জান্নাতুন নাইম ও জান্নাতুন ফেরদৌসকে নওগাঁ ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৫