ঢাকা, শনিবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

কারাগারকে নিরাপদ মনে করছেন খালেদা

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৫
কারাগারকে নিরাপদ মনে করছেন খালেদা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘জঙ্গিনেত্রী’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়া যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন তাতে তিনি মানুষের সামনে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।  

 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) কারাগারকেই সবচেয়ে নিরাপদ মনে করছেন।

তিনি নিজেই চাচ্ছেন তাকে অ্যারেস্ট করা হোক, কারাগারে প্রেরণ করা হোক। আদালত অবমাননার জন্য কোর্ট যে নির্দেশ দেবেন সেভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’  

 

বুধবার (৪ মার্চ) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জঙ্গিনেত্রী খালেদা মানুষকে পুড়িয়ে মারছেন। তার হাত থেকে শিশু, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা কেউ ছাড় পাচ্ছে ন‍া। এটাই জঙ্গিনেত্রী খালেদা জিয়ার কাজ। ’ 

 

‘জঙ্গিনেত্রী আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন। তিনি আদালতের নির্দেশ মানবেন না। এই ধরনের অবস্থা আজ বাংলাদেশে চলছে। তিনি নিজেই আদালতের মর্যাদা লঙ্ঘন করছেন। এর ফলাফল দাঁড়াবে যে, ভবিষতে কেউ আদালত মানবে না। ’ 

 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একটা বিষয় আমার মনে হচ্ছে, তিনি যেহেতু গণহত্যা চালিয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এখন তিনি হয়তো ভাবছেন কারাগারই তার সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। তিনি মনে হয় নিজেই চাচ্ছেন অ্যারেস্ট করা হোক, কারাগারে প্রেরণ করা হোক। তার তো নাটক করার অভ্যাস আছে। কিভাবে পূর্বানী হোটেল থেকে বের করা হয়েছিল এরশাদ সাহেব ভালো বলতে পারেন। নটঙ্গিপনা যাকে বলে। ’ 

 

‘নটঙ্গিপনা করার অভ্যাস আছে তার (খালেদা জিয়া)। নটঙ্গিপণা করে একটু বিদেশি প্রচার-প্রচারণায় যাতে আসতে পারেন সেই চেষ্টা করছেন তিনি। যাতে একটু সিমপ্যাথি (সহানুভূতি) পেতে পারেন সেটাই করছেন। তিনি নিজেই নিজেকে গ্রেফতার করে জনরোষ থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।  

 

তিনি বলেন, ‘মানুষের সহানুভতি পাওয়া, আর আন্তর্জাতিক পত্রিকায় শিরোনাম হওয়া চেষ্টা করছেন তিনি (খালেদা)। ভালো পাবলিসিটি যাতে পাওয়া যায় সেই চেষ্টা করছেন। এটাই তার শেষ ইচ্ছা। নিজেই নিজের রুমে বসে আছেন, সেখানে বিদেশিরা যাচ্ছেন। তার নেতা-কর্মীরা যদি না যান, তার পাশে না দাঁড়ান, তার কথায় যদি কেউ না আসে, তাহলে আমাদের কী দোষ?’ 

 

খালেদা জিয়ার জঙ্গিতৎপরতা তার দলের লোকেরাও পছন্দ করেন না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে তার দলের অনেক সাবেক এমপির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারাও এ সমস্ত কর্মকাণ্ড পছন্দ করেন না। ’ 

 

খালেদা জিয়া এখন নাজিমউদ্দিন রোড বেছে নিয়েছেন, ওখানে যেতে পারলে নিজেকে নিরাপদ মনে করবেন বলেও মন্তব্য করে শেখ হাসিনা।

 

খালেদার কোর্টে  না যাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না কেন তিনি কোর্টে গেলেন না। তার নাকি নিরাপত্তার অভাব। প্রশ্ন হচ্ছে, যিনি মানুষ পুড়িয়ে মারছেন তাকেই নাকি নিরাপত্তা দিতে হবে আমাকে। এমন দুর্ভাগ্য আমাদের! তারপরেও যাতে আইনের শাসন চলে সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া আছে। তারপরেও তিনি কোর্টে যাননি। বাস্তবতা হচ্ছে আইন যেভাবে শাসন করবে, আইনে যেটা আছে, আইন মোতাবেকই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’ 

 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার তো মনে হচ্ছে তিনি যেহেতু জঙ্গি তৎপরতার জন্য মানুষের কাছে ঘৃণ্য, প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। মানুষের কাছে বের হতেই ভয় পাচ্ছেন। মানুষের সাথে এতো দুর্ব্যবহার করেছেন, মানুষ মেরে এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছেন যে, নিজেকেই অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। তিনি নিজেই নিজেকে অফিসে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। ’ 

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) যখন নিরাপত্তা চাইলো তখন পুলিশ দেওয়া হলো। তখন আবার বলা হলো আমাকে পুলিশ দিয়ে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। আবার পুলিশ প্রত্যাহার করা হলে বলেন পুলিশ প্রত্যাহার হলো কেন। আমরা যাবো কোথায়?’

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন,  ‘এখন তিনি জানেন যেভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছেন। ১৫ লাখ শিক্ষার্থী ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারছে না। প্রতিটি কর্ম দিবসে হরতাল দিয়ে সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। তার টার্গেট নিম্নবিত্ত সাধারণ মানুষ। ’

 

‘খুনের যে বিচার। যে খুন করবে সেই খুনির বিচার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী হবে। আর আইন আদালতকে যদি কেউ অবমাননা করে। কোর্ট যেভাবে নির্দেশ দেবে, কোর্ট যেভাবে পদক্ষেপ নেবো। সেভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে’, বলেন প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

 

মাহফুজুর রহমানের অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জঙ্গিনেত্রী খালেদা জিয়া আইন মানেন না, আদলত মানেন না। আমাদের দেশে জঙ্গিনেত্রীর উত্থান হয়েছে। ’

 

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৫/আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা

** আলোচিত ৭ নারীর প্রামাণ্যচিত্র
** খালেদা-আইভির জাতীয় পতাকা ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন
** পার্বত্য জেলায় শূন্য পদে লোক নিয়োগের সুপারিশ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।