ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ও যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের এশিয়া প্যাসিফিক বিষয়ক উপ-কমিটির নব নিযুক্ত সভাপতি ম্যাট স্যালমনের সাথে তার ক্যাপিটাল হিলস্থ কার্যালয়ে সাক্ষাত করেন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত বলেন যে, এই মুহূর্তে সংগ্রাম কার্যত উগ্রবাদী, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, অপরদিকে ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াত ইসলামীর জন্ম হয় । তিনি বলেন যে, ৭৫ পরবর্তী সামরিক শাসকগণ সুচিন্তিতভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সুরক্ষা প্রদান করেছে এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিগুলোকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করে।
রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন জানান যে, ১০ম সংসদীয় নির্বাচনের এক বছর পূর্তিতে বিএনপি ও তার মিত্র জামায়াত ইসলামী অবিরত অবরোধ ও হরতালের ডাক দেয় এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, বোমা বিস্ফোরণ, যানবাহনে অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যমে নির্বিচারে নিরাপরাধ মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন বলেন যে, সরকার বর্তমানে স্বাধীনতা বিরোধী এবং উগ্রবাদীদের নির্মূলে বদ্ধপরিকর। বর্তমান সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তা বিধানে সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত আরো জানান, সাধারণ জনগণ বিএনপি ও তার মিত্রদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সাড়া দেয়নি উপরন্তু প্রাত্যহিক নাগরিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। যে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিহত করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন যে, বাংলাদেশেন মানুষ গোড়া থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ এবং ঐতিহ্যগতভাবে সকল ধর্মের মানুষ বাংলাদেশে শান্তি এবং সম্প্রীতির সাথে বসবাস করে আসছে। রাষ্ট্রদূত জানান যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। তিনি আরো বলেন যে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রকে নিয়ে সন্ত্রাস দমনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত কংগ্রেসম্যানকে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নারীবান্ধব নীতি গ্রহণের মাধ্যমে নারীদেরকে দেশের মূল ধারায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদানের জন্য কংগ্রেসম্যানকে অনুরোধ জানান।
কংগ্রেসম্যান ম্যাট স্যালমন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে অবহিত করার জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত পণ্যের প্রবেশাধিকারের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
কংগ্রেসম্যান স্যালমন রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনকে যুক্তরাষ্ট্রে তার কার্যকালীন সময়ে সকল সম্ভাব্য সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) নাঈম উদ্দিন আহমেদ উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৫