ঢাকা: আন্তর্জাতিক সাহসী নারীর পুরস্কার পাচ্ছেন সাংবাদিক নাদিয়া শারমীন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাহসী ভূমিকার রাখার জন্য বিশ্বের ১০ নারীকে ‘আন্তর্জাতিক সাহসী নারীর পুরস্কার’(International Women of Courage Awards- আইডব্লিউওসি)-এ ভূষিত করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর।
সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিবছর এ পুরস্কার দিয়ে থাকেন। নাদিয়া শারমীন তাদেরই একজন।
বৃহস্পতিবার ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১০ সাহসী নারীদের একজন বাংলাদেশের টেলিভিশন সাংবাদিক নাদিয়া শারমীন। পুরস্কার গ্রহণের জন্য তিনি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করছেন।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টায় (ওয়াশিংটন সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায়) এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
নাদিয়া দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে এই সম্মানজনক পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিক নাদিয়া শারমীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। সেখানকার নারী সাংবাদিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সফল নারীদের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি।
এ ছাড়া নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে অনুষ্ঠিতব্য ‘৫৯তম কমিশন অব দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেন’ সম্মেলনে বিশ্বের নারী অধিকারকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন নাদিয়া।
নাদিয়া শারমিন একাত্তর টেলিভিশন চ্যানেলের অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিক এবং নারী অধিকারকর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
নাদিয়া শারমীন ছাড়াও অন্য যারা সাহসিকতার জন্য পুরস্কার পাচ্ছেন, তারা হলেন- ক্যাপ্টেন নিলুফার রাহমানি (আফগানিস্তান এয়ারফোর্স), বলিভিয়ার রোজা জুলিয়েটা মনটানো সালভেটিয়েরা (প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক- অফিসিনা জুরিডিকা পারা লা ম্যূজের), মায়ানমারের মে সাবে ফিউ (পরিচালক, জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি নেটওয়ার্ক), সেন্ট্রাল আফিকান রিপাবলিকের (সিএআর) বিট্রিস ইপেয়ি (প্রেসিডেন্ট- ফাউন্ডেশন ভোইক্স ড্যু সিউর), গিনির ম্যারি ক্লেয়ারি
টিহিকোলা (নার্স- ইবোলামুক্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা এবং ইবোলা মুক্তকরণের একজন সক্রিয় কর্মী), জাপানের সায়েকা ওসাকাবে (প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিনিধি- মাতাহারা নেট), কসোভোর আরবানা এক্সহারারা (এডিটর-ইন-চিফ- জেরি), পাকিস্তানের তাবাসসুম আদনান (প্রতিষ্ঠাতা- খেন্দো জির্গা) ও সিরিয়ার মাজদ চৌরবাজি (এক্সটার্নাল রিলেশনস ডিরেক্টর- ওমেন নাও ফর ডেভেলপমেন্ট সেন্টারস)
দ্য ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট ২০০৭ সাল থেকে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত ৫০টি দেশের ৮৬ জন সাহসী নারীকে আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
২০১৩ সালের ৫ এপ্রিল ঢাকার মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হেফাজত কর্মীদের দিয়ে লাঞ্ছিত হন নাদিয়া শারমীন। একপর্যায়ে বাঁচার জন্য দৌড় দিলেও হেফাজত কর্মীরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন। অন্যান্য পুরুষ সহকর্মীদের সহযোগিতায় উদ্ধার পেলেও তাকে অনেক দিন হাসপাতালের বিছানায় অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাতে হয়। এ সময় তার কর্মস্থল একুশে টিভিও তাকে কর্মচ্যূত করে। কিন্তু সাহসী সাংবাদিক নাদিয়া শারমীন হাল ছেড়ে দেননি। বরং শান্তিকামী মানুষের সহযোগিতায় আবার কর্মজীবনে ফিরে আসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৫