আগরতলা (ত্রিপুরা) থেকে: ঢাকের বাদ্য আর কাঁসরের ধ্বনিতে মেতেছে ত্রিপুরা। এবারের শারদোৎসবে ঢাক-ঢোলের তালে তালে আর কাঁসরের শব্দে পূজো বেশ জমে উঠেছে।
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী (আখাউড়া) গ্রাম আগরতলার উত্তর রামপুরে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় শারদোৎসবের আয়োজনে তারই জীবন্ত প্রতিচ্ছবি দেখা গেল।
ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলা ঢোকার আগেই আখাউড়া চেকপোস্ট সড়ক ঘেঁষা বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম রামপুর। সেখানকার উত্তর রামপুরে ৫০ শতাংশ জনগণ মুসলমান সম্প্রদায়ের। ক’দিন আগেও ঈদ উৎসবে মেতেছিলেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। এখন উভয়েরই প্রস্তুতি শারদোৎসবের জন্য।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেল, গ্রামের যুবকরাই মণ্ডপ বানিয়ে সাজিয়ে তুলেছেন নানা সাজে। হিন্দু-মুসলমানের প্রভেদ নেই এখানে।
পূজার প্যাণ্ডেলের পাশেই দেখা মিলল একদল যুবকের। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের। কথা হচ্ছিল যুবকদের সঙ্গে। তারা জানালো, আমরা একেকজন একেক ধর্মের হলেও উৎসবে আমরা অভিন্ন।
সোমবার সন্ধ্যা সাতটা। আগরতলা শহরের প্রসিদ্ধ কলের মিস্ত্রী (প্লাম্বার) তাহের মিয়া ও মঙ্গল মিয়া সঙ্গে দেখা। তারা জানালেন, ত্রিপুরার অনেক এলাকাতেই আয়োজক কমিটিতে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে-মিশে উৎসবের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
সেখানকার উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় পাল জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই এখানের পূজার মূল থিম। আমরা পূজোতে এই বার্তাটি দিতে চাই যে, ধর্ম যার যার হলেও উৎসব সবার।
শুধুমাত্র উত্তর রামপুরেই নয়, সোমবার রাত ১০টার দিকে শহরের মসজিদ পট্টি এবং মন্ত্রীবাড়ি রোড এলাকায় গিয়েও দেখা গেল একই চিত্র। মসজিদ পট্টির গলিতে পূজোর আলোর ঝলকানি। পুকুরের পানির উপর তৈরি করা হয়েছে শান্তিপাড়া পূজা প্যান্ডেল। এছাড়া মন্ত্রীবাড়ি রোডে মসজিদের মিম্বরের আদলে বৈদ্যুতিক লাল-সবুজ বাতির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে পূজো প্যাণ্ডেলের গেইট।
পূজার সময়টাতে আগরতলা শহরে বাংলাদেশিদের আগমনও ঘটে ব্যাপক হারে। ওপারের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ভীড় করে আগরতলা শহরে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পূজা দেখতে আসা সমর বণিক জানান, সম্পূর্ণ ভিন্ন আমেজের দুর্গাপূজা উপভোগ করতেই এখানে আসা। এখানে আসলে উৎসব-আনন্দে ডুবে থাকা যায়। আর এখানকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ব্যাপারটি লক্ষ্য করার মতো।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৫
এসএইচ