ঢাকা: বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের ভোটার করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে সুবিধাবঞ্চিত ওইসব নাগরিকদের বিভিন্ন ইউনিয়নের ভোটার তালিকার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিলুপ্ত ছিটমহলকে ইউনিয়নে অন্তর্ভূক্ত করা সাপেক্ষে এ উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে চারটি ছিটমহলে এ কাজ শুরু করা হচ্ছে। বিলুপ্ত ওই ছিটমহলগুলো হলো-১৫১নম্বর বাঁশপচাই, ১৫২ নম্বর বাঁশপচাই ভিতরকুটি এবং ১৩৫ ও ১৩৬ নম্বর গোতামারী। যা লাটমনিরহাটের দুটো উপজেলার দুটো ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
সম্প্রতি ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মাহফুজা আক্তার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে-১৫১নম্বর বাঁশপচাই ছিটমহলকে লালমনিরহাটের সদর উপজেলায় অবস্থিত কুলঘাট ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। ১৫২ নম্বর বাঁশপচাই ভিতরকুটি ছিটমহল একই ইউনিয়েনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া হাতিবান্ধা উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের ১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের সঙ্গে ১৩৫ ও ১৩৬ নম্বর গোতামারী বিলুপ্ত ছিটমহলকে যুক্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তাই সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার এলাকা পুনর্বিন্যাসকরণ ও পুনবিন্যাসকালে নতুন ভোটার এলাকা সৃষ্টি হলে তার নামসহ কোড নম্বর অনুমোদনের প্রস্তাব পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহলগুলো ইউনিয়নে অন্তর্ভূক্ত হলে ধাপেধাপে সেসব এলাকায় ভোটার তালিকা করারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
১৯৭৪ সালের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩১ জুলাই মধ্যরাত ১২টার পর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন হয়। এর ফলে বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ১১১টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ৩৭ হাজার ৩৬৯ জন মানুষ বাংলাদেশের নাগরিক এবং ভারতের ভেতরে বাংলাদেশের ৫১টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ১৪ হাজার ২১১ জন মানুষ ভারতের নাগরিক হওয়ার সুযোগ পায়। তবে এদের মধ্যে অনেকেই স্বেচ্ছাপ্রত্যাবর্তন করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ পূর্বে কোচবিহারের মহারাজা ও রংপুরের মহারাজা তাদের অধিভূক্ত জমির খাজনা ব্রিটিশদের দেওয়া থেকে বিরত ছিলো। পাকিস্তান ও ভারত সৃষ্টির সময় ব্রিটিশদের গঠিত তৎকালীন বাউন্ডারি কমিশন এসব জমি রেখেই দুই দেশের সীমানা নির্ধারণ করে। ফলে পূর্ব পাকিস্তান ও ভারতে ১৬২টি জায়গায় দুই রাজার জমি থেকে যা। এরমধ্যে ১১১টি ছিলো পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশের আর ৫১টি জায়গা ছিলো ভারতের। রাজাদের জমি হওয়ায় ওইসব এলাকার মালিকানা কোনো দেশই পায়নি। যা পরে ছিটমহল হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এরইমধ্যে জমিদারী প্রথা বাতিল হওয়ায় প্রজারাই তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন জমির মালিকানা পায়।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৩
ইইউডি/বিএস