ঢাকা: সৌদি আরব থেকে সরকার নির্ধারিত সর্বশেষ ফ্লাইট আসার আর মাত্র ছয় দিন অবশিষ্ট থাকলেও হজ পালন শেষে এখনও দেশে পৌঁছাননি ২৮ হাজার ২৭৬ জন বাংলাদেশি হাজি।
বৃহস্পতিবার (অক্টোবর ২২) ঢাকা হজ অফিসের কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে জানায়, পবিত্র হজ শেষে এ পর্যন্ত ১৯৮টি ফিরতি ফ্লাইটে মোট ৭৮ হাজার ২৭৪ জন হজযাত্রী/হাজি দেশে ফেরত এসেছেন।
অপরদিকে সৌদি আরবে অবস্থানরত বাংলাদেশি হজযাত্রী/হাজিদের সর্বশেষ ফ্লাইট ২৮ অক্টোবর। এ সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশি হাজিদের ফেরত আসতে হবে। তবে কোনো হাজি যদি অসুস্থ বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৌদিতে অবস্থান করেন তবে চিকিৎসা শেষে তাদের ফেরত আনা হবে।
হজ অফিসের একটি সূত্র জানায়, প্রতি বছরই হাজিদের ফেরত আনার বিষয়ে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় বেধে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই সময় পার হওয়ার পরও অনেক হাজি আসে দেশে ফেরত আসেন।
এ বছর কম বয়সী অনেকেই পবিত্র হজ পালনে গিয়েছেন। তাদের ফিরে না আসার বিষয়েও প্রশ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছে হজ অফিস।
এ ব্যাপারে ঢাকা হজ অফিসের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ২৯ অক্টোবরের মধ্যে সকল বাংলাদেশি হাজিদের ফেরত আনার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি সরকার। হাজিদের ফেরত আনার বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, হাজিদের ফেরত আনার বিষয়টি সম্পূর্ণ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপর নির্ভর করছে। হাজিদের আনার জন্য বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইট সিডিউল তৈরি করছে। ফ্লাইট সিডিউল বাড়িয়ে-কমিয়ে সবাইকে আনার ব্যবস্থা করবে বিমান কর্তৃপক্ষ।
যদি কোনো হাজি সৌদিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকে তবে তাদের চিকিৎসা শেষ হলেই দেশে ফেরত আনা হবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা হজ অফিসের তথ্য কেন্দ্রের ইনচার্জ কবীর আল মামুন এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে জানান, চলতি বছর হজযাত্রীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে মোট ২৮৭টি ফিরতি ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১৫১টি এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স ১৩৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
পবিত্র হজ শেষে এ পর্যন্ত ১৯৮টি ফিরতি ফ্লাইটে মোট ৭৮ হাজার ২৭৪ জন হজযাত্রী/হাজি দেশে ফেরত এসেছেন।
এই হজযাত্রীদের আনতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১০৬টি এবং সৌদি অ্যারাবিয়া এয়ারলাইন্স ৯২টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
বৃহস্পতিবারও (২২ অক্টোবর) হজযাত্রীবাহী ৮টি ফিরতি ফ্লাইটের শাহজালালে অবতরণ করার কথা। এর মধ্যে ৫টি বিমানের এবং ৩টি সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের পবিত্র হজ পালন করতে সরকারি-বেসরকারি ভাবে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন ১ লাখ ৬ হাজার ৫৫০ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী/হাজি। এ বছর ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত হজ এজেন্সির সংখ্যা ছিলো ৭৮৩টি।
মিনা দুর্ঘটনাসহ সৌদি আরবে এ বছর হজ পালনের সময় সর্বমোট ইন্তেকাল করেন ২৭০ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী/হাজি। এর মধ্যে মক্কায় ২৫৫ জন, মদিনায় ১১ জন এবং জেদ্দায় ৪ জন হজযাত্রী/হাজির মৃত্যু হয়।
মিনা দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্তকৃত মৃত হাজির সংখ্যা ১৩৭ জন। এর মধ্যে ৯৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মিনা দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন ৫৩ জন হাজি।
অপর দিকে, মক্কায় ক্রেন দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি একজন (পুরুষ) হাজির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হন ৪০ বাংলাদেশ হজযাত্রী। এর মধ্যে একজন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এছাড়া সৌদি আরবে হজ পালন করতে গিয়ে ১৩২ জন হাজির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলেও জানায় ঢাকা হজ অফিস।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৫
এসজেএ/আরআই