ঢাকা: বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রাত নয়টা। বগুড়া থেকে একটি বাস এসে থামলো রাজধানীর গাবতলী পর্বত সিনেমা হলের সামনে।
বাস থেকে ব্যাগ হাতে অন্য যাত্রীদের মতই নিচে নেমে এলেন দুই যুবক। তাদের গতিবিধি সন্দেহ মনে হওয়ায় ব্যাগ তল্লাশি শুরু করেন দারুস সালাম থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইব্রাহিম মিয়া। এ সময় ওই ব্যাগ বহনকারী যুবক আাকস্মিকভাবে ইব্রাহিমকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ মাসুদ রানা নামে একজনকে আটক করলেও পালিয়ে যায় মূল হত্যাকারী।
দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান জানান, ব্যাগ তল্লাশি করার সময়ই এএসআই ইব্রাহিম মিয়াকে ছুরিকাঘাত পালিয়ে যায় দুই যুবক।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকের কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ড. নাজমা ফাতেমা বাংলানিউজকে জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার পথেই মারা যান ইব্রাহিম। তার বুকের ওপর ও পেটে দু’টি ছুরিকাঘাত হয়েছে। ছুরিকাঘাতেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে তিনি মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী দারুস সালাম থানার টহল গাড়িচালক মো. মোতালেব বাংলানিউজকে বলেন, সিনেমা হলের সামনে নিয়মিত চেক পোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন পাঁচ পুলিশ কনস্টেবল। পাশে টহলের দায়িত্বে পালন করছিলেন এসআই হাবিব ও এএসআই ইব্রাহিম স্যার। গাড়িতে বসে আমি দেখলাম, বগুড়া থেকে আসা একটি বাস থেকে দুই যুবক নামলো। একজনের হাতে ছিলো ব্যাগ। ব্যাগ হাতের ওই যুবককে তল্লাশি করার সময় কোমরে থেকে ছুরি বের করে ইব্রাহিম স্যারকে আঘাত করে যুবকটি পালিয়ে যায়।
এদিকে, পুলিশ সদস্যসের নিহতের সংবাদ শুনে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, এই ঘটনায় আটক যুবক মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা খুনির নাম পরিচয় পেয়েছি। খুনিকে শনাক্ত করা গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তার নাম পরিচয় বলা যাচ্ছে না।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যাগে একটি ভিডিও ক্যামেরা পাওয়া গেছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ হাসান।
দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিমুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত ইব্রাহিমের বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার পালপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুস সালাম।
দারুস সালাম থানার ৩৮/৩ বর্ধবাড়ি এলাকার একটি পাঁচতলা বাসায় স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন ভাড়া থাকতেন এএসআই ইব্রাহিম। গত দেড় বছর ধরে দারুস সালাম থানায় তিনি কর্মরত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৫
এনএ/টিআই