ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সমুদ্র ও নদী ভাঙন রোধে সেনাবাহিনীর ‘টেট্রাপড’ পদ্ধতি

সাব্বির আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৫
সমুদ্র ও নদী ভাঙন রোধে সেনাবাহিনীর ‘টেট্রাপড’ পদ্ধতি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার থেকে: সমুদ্র আর নদীর ভাঙন ঠেকাতে দেশে নতুন পদ্ধতি বের করেছে সেনাবাহিনী। বিশ্বের দীঘতম সমুদ্র উপকূলে ভাঙন রক্ষায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রথমবারের মত এই ‘টেট্রাপড’ নামের পদ্ধতির ব্যবহার শুরু করেছে সেনাবাহিনী।



পরীক্ষামূলক ভাবে এ পদ্ধতির সফলতার পর এখন মেরিন ড্রাইভ (সমুদ্র তীরবর্তী সড়ক) কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পযন্ত সড়ক প্রকল্পে এর ব্যবহার শুরু করেছেন তারা। অন্য যে কোনো পদ্ধতির চেয়ে এটি সহজ এবং সাশ্রয়ী বলে জানান সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা।

তারা জানান, কংক্রিটের তৈরি চার কাটা বিশিষ্ট চতুর্কোনা আকৃতির বিশেষ ধরনের ‘টেট্রাপড এ পিলার সমুদ্রের বিশাল তরঙ্গমালাকে নিমিষে শক্তিহীন করে ‘ডেড ওয়াটার’-এ পরিণত করে দেবে। এতে সুরক্ষা পাবে নদী ও সমুদ্র তীর এবং এর স্থাপনাসমূহ।

কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি হয়ে ইনানী সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, মেরিন ড্রাইভ সড়কের ৮২ কিলোমিটারে এই পদ্ধতি ব্যবহার করছে সেনাবাহিনী।

সেনবাহিনীর মেরিন ড্রাইভ সড়কের প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আব্দুল ওয়াহাব বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মত টেট্রাপড ব্যবহার শুরু হলো। বিশ্বের কয়েকটি দেশে এরকম টেট্রাপড ব্যবহার হচ্ছে।

মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পের কর্মকর্তা মেজর নাহিদ বাংলানিউজকে জানান, ‘টেট্রাপড’-এর চারটি পা থাকবে যার তিনটি থাকবে মাটিতে অপরটি উপরের দিকে।

ক্রেনের মাধ্যমে এটি সমুদ্র তীরে স্থাপন করা হয়। একেকটি টেট্রাপড তৈরিতে ১০ হাজার ২৫০ টাকা ব্যয় হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এর আগে জি টিউব পদ্ধতিতে সমুদ্র উপকূল রক্ষায় বাঁধ দেওয়া হতো। যা দীঘস্থায়ী ছিলো না এবং কাঁকড়ার কামড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়তো। এসব পদ্ধতি ছিলো অনেক ব্যয়বহুল।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, জি টিউব দিয়ে তীরে বাঁধ দিতে গেলে যেখানে সাত কোটি ১৯ লাখ টাকা দরকার সেখানে টেট্রাপড পদ্ধতিতে মাত্র ৭০ লাখ টাকা লাগবে।

শুক্রবার সেনাবাহিনীর নতুন এই  টেট্রাপড পদ্ধতির ব্যবহার সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ পদ্ধতিতে মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পের সমুদ্র তীর সুরক্ষা করা হচ্ছে।

২০১৭ সালের জুনে মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান মন্ত্রী।

প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর রেজওয়ানুর রহমান জানান, স্পেন, জাপান এবং কানাডায় এটি ব্যবহার হচ্ছে। ভারতের তাজ হোটেলের সামনেও একই সাদৃশ্যের পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আব্দুল ওয়াহাব বলেন, প্রতি বছর মেঘনা, যমুনা ও পদ্মা নদীর তীরবর্তী বিপুল এলাকা ভাঙনে নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। উপকূলীয় এলাকাও ভাঙছে। টেট্রাপোড  এসব ভাঙন মোকাবেলাতেও সক্ষম হবে।

বাংলাদেশ সময়:  ১৬১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৫
এসএ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।