ঢাকা: ‘আগে এত বেশি ময়লা ছিল যে ট্রাক আর পে লোডারের অভাবে ময়লার স্তূপ হয়ে থাকত। আর এখন কাজের গতির ফলে ময়লার জন্য ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) সকালে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর নতুন বাজার মোড় এলাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ময়লার ডাম্পিং এর পরিচ্ছন্নকর্মী ডালিম মিয়া।
কিছুদিন আগেও নতুন বাজার মোড়ে রাস্তার ওপর উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ময়লা ফেলার এ জায়গায় প্রায় দুপুর পর্যন্ত জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার হতো না।
ট্রাক ও পে লোডার সংকট আর তদারকির অভাবে ময়লা জমে থাকতো দিনভর। তবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আনিসুল হক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটে। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর এই স্পটের আবর্জনা দ্রুত সরিয়ে নিতে ট্রাক, পে লোডার ও পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
পরিচ্ছন্ন কর্মীরা জানান, মেয়রের নির্দেশ ভোর ৫টার পর যেন রাস্তায় ময়লা না থাকে। এছাড়া সকালে ধুয়ে দেওয়া হয় ময়লা রাখার স্থান। ফলে পথচারীদের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে এসেছে।
সিটি কর্পোরেশনের ১৪ জন পরিচ্ছন্নকর্মী এখানে কাজ করেন বলে বাংলানিউজকে জানান ডালিম।
তিনি বলেন, দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ময়লা ফেলা হয়। ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ময়লা রাস্তা থেকে সরিয়ে পে লোডার দিয়ে ট্রাকে তোলা হয়।
রাত ১০টার পর কোন ময়লা রাস্তায় পড়ে থাকে না। আগে ট্রাকের সংখ্যা কম ছিল, ময়লা ছিল বেশি। ফলে ময়লা রাস্তায় পড়ে থাকতো।
পরিচ্ছন্নকর্মী কামাল বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৮ ট্রাক ময়লা হয়। ভোর ৫টার মধ্যে আমিন বাজারের বলিয়ারপুরে সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত জায়গায় এসব ময়লা ফেলা হয়। পরে মেয়রের নির্দেশে পানি দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয় ময়লার জায়গাটি। ফলে সকালে মানুষকে ঘুম থেকে উঠেই আর ময়লা দেখতে হয় না।
ডাম্পিং স্পটটির সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আগে একটি পে লোডার ছিল। এতে ট্রাকে ময়লা তুলতে বেশি সময় লাগতো।
গত দু’ মাস আগে ১টি নতুন পে লোডার মেশিন দেওয়া হয়েছে। ২টি ট্রাক বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ৮টি ট্রাক ময়লা নিতে পারে বিধায় ময়লা থাকে না।
তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের ১৫টি সুইপার ভ্যান, পাবলিক প্রায় শতাধিক ভ্যান গাড়ি ময়লা নিয়ে আসে। পে লোডার মেশিন বেশি থাকার কারণে রাস্তায় ময়লা কম পড়ে।
মেয়রের নির্দেশ ভোর ৬টা হলেও আমরা ৫টার মধ্যে ময়লা পরিষ্কার করে ফেলি। উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ময়লার এই স্পটটিই একমাত্র পানি দিয়ে ধোয়া হয় বলে দাবি তার।
নর্দ্দা থেকে হেঁটে ময়লার স্পটটি পার হয়ে নতুন বাজারের একটি স্কুলে যায় রাবিব হাসান। গত ৩ মাস আগেও নাকে রুমাল দিয়ে চলতেন তিনি। কিন্তু গত ৩ মাসে দুর্গন্ধ কমে এসেছে বলে জানায় রাবিব।
তিনি বলেন, আগের ৩ মাস থেকে রাস্তায় ময়লা কম দেখছি। এখন তো নেই বললেই চলে। আগে দুপুর হয়ে গেলেও ময়লা সরানো হতো না। প্রায় ১ কিলোমিটার পর্যন্ত দুর্গন্ধ ছড়িয়ে নাকে লাগতো। কিন্তু এখন দুর্গন্ধ তেমন একটা নেই। তবে নতুন বাজারের ওই ময়লার স্পটটি একবারেই রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানায় রাবিব।
ময়লার স্পটের রাস্তার উল্টো পাশের এ আর মটরস এর কর্মচারী মো. রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, আগে দোকানে বসা দায় ছিল। ময়লা পরিষ্কার করাতে ভালো লাগছে।
ময়লার স্পটের কাছে ফুটপাতে প্রায় ১০ বছর ধরে চায়ের দোকান করেন রোকেয়া বেগম। দ্রুত ময়লা পরিষ্কার আর পানি দিয়ে ধুয়ে দেওয়ায় মেয়রকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৫
আরইউ/আরআই