ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শিশু রাজন হত্যা

মুহিতসহ ৬ আসামির নির্দোষ দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৫
মুহিতসহ ৬ আসামির নির্দোষ দাবি ফাইল ফটো

সিলেট: শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যার পর মরদেহ গুমের চেষ্টাকালে আটক হয়েছিলেন প্রধান আসামি কামরুলের ভাই মুহিত আলম। কিন্তু আদালতে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

বলেছেন, ম্যাজিস্ট্রেট নাকি পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করিয়েছেন।

রোববার (২৫ অক্টোবর) আলোচিত মামলার আসামিদের ৩৪২ ধারায় মতামত গ্রহণকালে আদালতে মৌখিক বক্তব্যে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন মুহিত আলম। তিনি আদালতে লিখিত আবেদনও করেছেন।

মুহিত আলমের সহোদর আলী হায়দার আদালতে লিখিত আবেদন না করলেও কাঠগড়ায় দাড়িয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, রাজনকে নির্যাতন করে হত্যার সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না।

আলোচিত এ মামলার অপর আসামি রাজনকে হত্যার ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর আহমদ আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রত্যাখ্যান করে লিখিত আবেদন করেছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শওকত আলী বাংলানিউজকে জানান, প্রথমদিনের যুক্তিতর্কের আগে আলী হায়দার ছাড়া ৬ আসামির ৫ জনই নির্দোষ দাবি করে আদালতে লিখিত আবেদন করেছেন।

আসামি নূর মিয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রত্যাখ্যান করে আবেদন করেছেন। যদিও তা প্রত্যাখ্যানের বিধান নেই বলে জানান তিনি।

আলোচিত এ মামলায় কামরুল ইসলামসহ ১১ আসামির মধ্যে ৬ জন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তারা হলেন প্রধান আসামি কামরুলের ভাই মুহিত আলম, অপর ভাই আলী হায়দার, ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর আহমদ, আয়াজ আলী, আজমত উল্লাহ, ফিরোজ আলী।  

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ জানান, রোববার দুপুরে যুক্তিতর্কের প্রথম দিন শুরুতেই আসামিদের মতামত গ্রহণ করেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা। মতামত গ্রহণ শেষে শুরু হওয়া যুক্তিতর্ক বিকেল চারটায় শেষ হয়। সোমবার (২৬ অক্টোবর) ফের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য্য করেছেন বিচারক।

গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে সামিউল আলম রাজনকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ গুম করতে গিয়ে জনতার
হাতে আটক হন কামরুলের ভাই মুহিত আলম। নির্যাতনের ২৮ মিনিটের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশে-বিদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। খুনীদের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন জনতা।

নিহত রাজন সদর উপজেলার কান্দিরগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের আজিজুল ইসলাম আলমের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর মহানগরীর জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে মুহিত আলমসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গিয়ে হত্যাকারীদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতার অভিযোগে বরখাস্ত হন মহানগরীর জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আলমগীর হোসেন, এসআই জাকির হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।

গত ১৬ আগস্ট সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামসহ ১৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ হত্যা মামলার  চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার । এর আগে মুহিত আলমসহ ৮ জন এ ঘটনায় আদালতে হত্যার দায় স্বীকার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর একই আদালতের বিচারক চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায়  সৌদি আরবে আটক কামরুলসহ ১৩ আসামীর বিরুদ্ধে ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় চার্জ গঠন করেন।

গত ১ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ কার্যদিবসে এ মামলায় মোট ৩৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। পরবর্তীতে কামরুলের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২১ অক্টোবর ১১ সাক্ষী তার উপস্থিতিতে ফের সাক্ষ্য দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৫
এনইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।