ঢাকা: মোবাইল ফোনের রিংটোন ও ওয়েলকাম টিউন হিসেবে জাতীয় সংগীতের ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এছাড়া জাতীয় সংগীতকে মোবাইলের রিংটোন হিসেবে ব্যবহার করায় রবি অজিয়াটা লিমিটেডকে ৩০ লাখ টাকা মহাখালীর ক্যান্সার হাসপাতালকে দেওয়ারও নির্দেশনা দেন সর্বোচ্চ আদালত।
এ বিষয়ে মোবাইল অপারেটর রবি’র আবেদন নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর আগে গত ১১ মে গ্রামীণফোনকে লিভার ফাউন্ডেশনে এবং বাংলালিংককে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি রিসার্চে দাতব্য অনুদান হিসাবে ৩০ লাখ টাকা দিতে
নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এ রায়ের ফলে মোবাইল ফোনের রিংটোন ও ওয়েলকাম টিউন হিসেবে জাতীয় সংগীতের ব্যবহার নিষিদ্ধই থাকল বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুদ আহমেদ সাঈদ।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কালিপদ মৃধা ২০০৬ সালে হাইকোর্টে জাতীয় সংগীতকে রিংটোন ও ওয়েলকাম টিউন হিসেবে ব্যবহারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৪ অনুচ্ছেদে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় প্রতীক সংরক্ষণের কথা বলা আছে। এ ছাড়া ১৯৭৮ সালের জাতীয় সংগীত বিধানে ২০টি ক্ষেত্রে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মোবাইল ফোনের রিংটোন হিসেবে জাতীয় সংগীতের ব্যবহার সংবিধান ও আইনের পরিপন্থি।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৫ আগস্ট বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের হাইকোর্ট বেঞ্চ মোবাইলে রিংটোন ও ওয়েলকাম টিউন হিসেবে জাতীয় সংগীতের ব্যবহার অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করে রায় দেন।
একইসঙ্গে একটেল (রবি), গ্রামীণফোন ও বাংলালিংককে ৫০ লাখ টাকা করে কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে অনুদান দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে তিন অপারেটরই আপিল করে। গত ১১ মে আপিল বিভাগ গ্রামীণফোন ও বাংলালিংককে ২০ লাখ টাকা করে কমিয়ে ৩০ লাখ টাকা দাতব্য অনুদান দিতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জাতীয় সংগীত ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন।
বৃহস্পতিবার অপর মোবাইল অপারেটর রবির আবেদনও নিষ্পত্তি করে রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে ২০ লাখ টাকা কমিয়ে ৩০ লাখ টাকা জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালকে দাতব্য অনুদান হিসেবে দিতে নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৫
ইএস/এএসআর