ঢাকা: আগামী ডিসেম্বরে সারা দেশের সব পৌরসভায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে ইসি সচিবলায়ের নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
ইসি সচিব বলেন, দলীয় প্রতীকে পৌরসভা নির্বাচন করার অধ্যাদেশের গেজেট আমরা পেয়েছি। গেজেট পাওয়ার আগেই প্রার্থীদের আচরণ বিধিমালা এবং নির্বাচন বিধিমালার একটা খসড়া তৈরি করে রেখেছিলাম। এখন তা খুব দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর- এই তিন পদেই দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে করে ব্যালটের আকার অনেক বড় হয়ে যাবে। ব্যালট ভাঁজ করা, সিল মারাসহ পুরো প্রক্রিয়াতেই স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয় আছে। এতে ভোটাররাও স্বচ্ছন্দ্য বোধ করবে না। তাই সরকারি প্রেসগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে-নির্বাচন এক দফায় হবে, নাকি কয়েক দফায় ভোটগ্রহণ করা হবে।
পৌরসভা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার জন্য সোমবার (২ নভেম্বর) অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। যার গেজেট প্রকাশিত হয় মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর)। এরপরই তা সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশন। ডিসেম্বরে ২৪৫ পৌরসভায় নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, খসড়া বিধিমালা দ্রুত চূড়ান্তের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। তাদের অনুমোদন পেলেই আরেকটি প্রজ্ঞাপন করে নির্বাচন বিধিমালা ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার সংশোধনী প্রকাশ করা হবে। এজন্য খুব বেশি সময় নেব না। কারণ, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে চাই। সে মোতাবেক আমরা আমাদের প্রস্তুতি নেবো।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, অধ্যাদেশ অনুযায়ী, যাকে রাজনৈতিক দল মনোনয়ন দেয়নি, তাকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী বোঝাবে। তাই স্বতন্ত্র হিসেবে যে কারো নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
মো. সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, কিভাবে কে প্রার্থী হবে, তা আইনে বা অধ্যাদেশে থাকে না। এগুলো বিধিমালায় থাকে। বিধিমালা চূড়ান্ত হলেই আমরা জানাবো।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে এ নির্বাচনের সাদৃশ্য থাকবে। তবে পৌর নির্বাচন যেহেতু দলগুলোর একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের অংশগ্রহণে হয়, তাই দলের কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের মনোনয়ন দেওয়ার প্রয়োজন আছে, নাকি এজন্য তারা ডেলিগেট কবরেন, এটা বিবেচনায় বিষয় আছে।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, যে কোনো রাজনৈতিক দল তার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের নেতা, সমর্থক, কর্মীকে নিয়ন্ত্রণ করবে। সেটা দলের বিষয়। এটা সরকারের বা ইসির ভাবনার বিষয় নয়। কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কাজ করলে, কী অ্যাকশন হবে, তা দল ঠিক করবে।
নির্বাচনের জন্য বিধিমালা করবো, কাউকে সুবিধা বা অসুবিধা দেওয়ার জন্য নয়, একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন করার জন্য। তাই কারো জন্য এটি খড়গ হবে না, বলেন তিনি।
আইন সংশোধনের পর অধ্যাদেশে রাজনৈতিক দল বলতে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত কোনো দলকে বোঝানো হয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে-এরূপ কোনো প্রার্থী, যিনি কোনো রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনয়নপ্রাপ্ত নন।
এছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কোনো ব্যক্তিকে কোনো রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘন্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৫/আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা
ইইউডি/আরএম
** দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন: ভোটের হারে শঙ্কা