ঢাকা: প্রতি বছর দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে। পণ্যের দাম বেশি বা কম দেখিয়ে মোট পাচারের ৬০ ভাগই আমদানি-রফতানির নামে পাচার হচ্ছে।
এমন অভিযোগ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ’র (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের।
মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোটার্র্স অ্যাগেনস্ট করাপশন (ৠাক) এবং টিআইবি’র যৌথ উদ্যোগে জাতিসংঘের দুর্নীতি বিরোধী কনভেনশন’র ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৠাকের সভাপতি মিজান মালিকের সভাপতিত্বে এতে সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে সংগঠিত বড় দুর্নীতিগুলোর সঙ্গে উন্নত দেশগুলোর বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে দুর্নীতি শুধু বাংলাদেশ বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর সমস্যা নয়; এ সমস্যা উন্নত বিশ্বেরও।
মালেয়শিয়া, সিঙ্গাপুর এবং সুইজারল্যান্ডের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এমন অনেক দেশ আছে তারা এমনভাবে নিজেদের আইন-কানুন তৈরি করেছে সেসব দেশে অর্থপাচারকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগে উৎসাহিত হয়।
তিনি বলেন, মালেয়শিয়ার সেকেন্ড হোম প্রকল্পে বাংলাদেশি বিত্তশালীদের বিনিয়োগ বাড়ছে। এটা উদ্বেগের। এভাবে দেশে-বিদেশে অর্থপাচার, দেশের মধ্যে ছোট ও বড় ধরনের দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির ঘটনা প্রতিরোধ করতে সরকারের রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার বিকল্প নেই।
পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার জন্য উদ্যোগী হতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার নজির দুদক ইতিমধ্যে স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। অপরাপর ঘটনায় টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ না নিলে সাধারণ মানুষ মনে করবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো) হেয় করার জন্যই এটা করা হয়েছে।
ৠাকের সভাপতি মিজান মালিক বলেন, ২০০৭ সালে অরাজনৈতিক সরকার জাতিসংঘ দুর্নীতি বিরোধী সনদে স্বাক্ষর করলেও পরবর্তী নির্বাচিত সরকার এর দায়িত্ব নেয়না। সরকারকে অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হবে এবং তার পূর্ববর্তী সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।
সোমবার (২ নভেম্বর) থেকে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে জাতিসংঘ দুর্নীতিবিরোধী সনদে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলোর ৬ষ্ঠ সম্মেলন শুরু হয়েছে। যা ৬ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
এ বৈঠককে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার টিআইবি ও দুদকের মধ্যে আলোচনা সভার আয়োজন হয়েছে। বৈঠকে আগামীতে টিআইবি-ৠাকের সঙ্গে কিভাবে যৌথভাবে কাজ করবে সে বিষয়েও আলোচনা হয়।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন ৠাকের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম সাগর, যুগ্ম সম্পাদক আদিত্য আরাফাত ও তাওহীদ সৌরভ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ ফয়েজ, অর্থ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক মো. হাসিব বিন শহিদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এম এ রহমান মাসুম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক গোলাম সামদানী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক রিশাদ হুদা। এছাড়া কাযনির্বাহী সদস্যদের মধ্যে মোর্শেদ নোমান, সাঈদ আহমেদ, জেসমিন মলি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৫
এডিএ/জেডএস