ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

আশুলিয়ায় পুলিশ হত্যার ৩ দিনেও খোলেনি জট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৫
আশুলিয়ায় পুলিশ হত্যার ৩ দিনেও খোলেনি জট ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: জট খোলেনি আশুলিয়ায় পুলিশ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রহস্য। তিনদিন পরও জড়িতদের নিয়ে অন্ধকারে পুলিশ।



কারা কী উদ্দেশ্যে দিনে-দুপুরে এ ঘটনা ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে রয়েছেন, তা নিয়ে এখনও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। চলছে সন্দেহ আর অনুমাননির্ভর তদন্ত।

তবে এ ঘটনার পর এখনও থমথমে আশুলিয়া। আতঙ্ক কাটেনি তল্লাশি চৌকিতে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যদের। মনোবল বাড়াতে নতুন কৌশল আর দক্ষতাসম্পন্ন পুলিশ সদস্যদের নিয়ে চলছে তল্লাশি চৌকি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পেশাদারিত্ব আর সাহসের অভাবেই পুলিশ খুনের ঘটনায় নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন ঘাতকরা। সেই তল্লাশি চৌকিতে দায়িত্ব পালাবদলের মুর্হৃতে পুলিশ সদস্যরা যে ঢিলেঢালা অবস্থানে ছিলেন, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তদন্তকারীরা।

আকস্মিক হামলায় সহকর্মীদের ফেলে পালিয়ে যাওয়া তিন কনস্টেবল আপেল, পিনহারুল ইসলাম ও ইমরানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয় তাদের।

নিছক দায়িত্ব পালনে অবহেলা নাকি অন্য কোনো রহস্য বা কোনোকিছুর সঙ্গে তাদের যোগসূত্র রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে তদন্তকারীরা দফায় দফায় কথা বলছেন এ তিন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে।

তিনদিনের মাথায় এসে তদন্তকারী একটি সূত্র বলছে, মূলত জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েই চলছে তদন্তের প্রাথমিক কার্যক্রম।

‘দেখুন তারা কিন্তু অস্ত্র কেড়ে নিতে পারতেন। করেননি। ওভাবে নৃশংসভাবে না কুপিয়ে গুলিও তো করতে পারতেন। তাও করেননি। তারা নৃশংসতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, জঙ্গিরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ’

দুপুরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্তকারী এক পুলিশ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়ে বলছেন, আশুলিয়ায় ব্যাংকে হানা দিয়ে আট হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের ব্যাপারে ব্যাপক তদন্ত চলছে। তাদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ওই ঘটনায় বাকী নামের ‘মাস্টারমাইন্ড’ এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। আমরা বাকীকে খুঁজছি। তাকে পাওয়া গেলে অনেক তথ্য মিলবে, যোগ করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি জানান, পুলিশ হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল ও আশেপাশের বিটিএসের অধীনে থাকা সন্দেহজনক মুঠোফোনগুলোর কল ডিটেইলস এখন গোয়েন্দাদের টেবিলে। ব্যাপক পর্যলোচনা চলছে এসব ফোন কলের।

তদন্তকারী সূত্রমতে, কারা কীভাবে কোন রাস্তা ধরে এসেছেন, আবার কীভাবে কোন রাস্তা দিয়ে চলে গেছেন - তা জানতে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।

‘তবে এটা ঠিক যে, আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা পেশাদারিত্বের পরিচয় দেননি। তারা সবাই চাকরিতে নবীন। আর বড় কথা হলো, তারা শিল্প পুলিশের সদস্য। তাদের অনেকেরই সাধারণ পুলিশের মতো পেশাগত অভিজ্ঞতা আর ধারণা নেই। কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে সেই দক্ষতা দূরে থাক, সেখানে কোনো কমান্ডিং অফিসার না থাকাতেই এ বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটেছে। ’ বলেন, তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বাংলানিউজকে জানান, আমরা কাজ করছি। অগ্রগতির পথে। আশা করি, শিগগির ভালো কোনো খবর দিতে পারবো।

গত বুধবার (০৪ নভেম্বর) সকালে আশুলিয়ায় নন্দন পার্কের সামনে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হানা দিয়ে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করেন মুকুল হোসেন নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে। এ ঘটনায় আহত হন সেখানে থাকা আরও চার পুলিশ কনস্টেবল।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৫
এসএস

** আশুলিয়ার সেই ৩ শিল্প পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।