ঢাকা: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ইউনেস্কো’র দ্বিতীয় ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানে স্বীকৃতির পর এখন থেকে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি ইউনেস্কো’র লোগো ব্যবহার করতে পারবে।
মহান ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট জাতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ইউনেস্কো’র সহযোগী প্রতিষ্ঠানে উন্নীত হওয়ার পর এ সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুবোধ চন্দ্র ঢালী।
প্যারিসে ইউনেস্কো’র সদর দফতরে সংস্থার ৩৮তম সাধারণ অধিবেশনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটকে ইউনেস্কো’র ক্যাটাগরি-২ ইনস্টিটিউটে উন্নীত করার প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয় শনিবার (০৮ নভেম্বর)।
সুবোধ চন্দ্র ঢালী জানান, ইউনেস্কো’র ক্যাটাগরি-২ প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন থেকে এ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রসারিত হবে।
ইউনেস্কো পরিচালিত ‘মাতৃভাষা-আশ্রয়ী শিক্ষা’, ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য শিক্ষা’ ইত্যাদি কার্যক্রমে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এখন থেকে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি ইউনেস্কো’র লোগো ব্যবহার করতে পারবে।
ইউনেস্কো’র সঙ্গে পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময় ছাড়াও দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ এবং কৌশলগত কর্মসূচি বাস্তবায়নের সুযোগ পাবে এ প্রতিষ্ঠান।
বিভিন্ন দেশের বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সংরক্ষণ, লালন ও সম্প্রসারণেও এ প্রতিষ্ঠান কাজ করবে। বিশ্বে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এখন ৯৫টি। এরমধ্যে এশিয়ায় ৪টি।
২০০১ সালের ১৫ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনান। তিনতলা ভবন বিশিষ্ট অবকাঠামো নির্মাণের কাজ ২০০৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়।
ইউনেস্কো প্রতিনিধিদল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অবকাঠামো, জনবল, কর্মকাণ্ড সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে ঢাকায় তৎকালীন পাকিস্তানী শাসকদের বুলেটের আঘাতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অগনিত ছাত্র-জনতা শহীদ হন।
১৯৯৯ সালে ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। বর্তমানে সারাবিশ্বে এ দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বর্তমানে ইউনেস্কো’র অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রয়েছেন শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খানসহ কর্মকর্তারা।
এ অধিবেশনেই শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ ২০১৫-১৭ মেয়াদে ইউনেস্কো’র ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
অধিবেশনে জাতিসংঘের ১৯৫টি দেশ ও ৮টি সহযোগী দেশের শিক্ষামন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৫
এমআইএইচ/জেডএস