ঢাকা: স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচনের আইন সংশোধনের পর নির্বাচন কমিশনও (ইসি) আচরণ বিধি সংশোধন করছে। যেখানে মন্ত্রী-এমপিসহ সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
এ বিষয়টি বেখেয়ালে বিধিমালায় যুক্ত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ।
রোববার (০৮ নভেম্বর) বিকেলে ইসি সচিবালয়ের নিজ কার্যলয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা বিষয়টি যদি আগে আমাদের বলতেন, তবে আর অন্তর্ভূক্ত হতো না। এটা ভুলে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা কেউ খেয়াল করিনি। এটা ঠিক হয়নি।
তিনি আরো বলেন, সমস্যা নেই। আমাদের খসড়া বিধিমালাটি অনুমোদনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা কী ভেটিং করে দেখি। সংবিধান এতো বড় একটা দলিল, সেটা ষোলবার সংশোধন হয়েছে। কাজেই আইন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো পরামর্শ এলে আমরা তা বাদ দিয়ে দেবো। এছাড়া পরবর্তীতেও সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।
শাহ নেওয়াজ আরো বলেন, স্থানীয় সরকারের পৌরসভা নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। তাই বিধিমালা প্রস্তুতে আমাদের তাড়া রয়েছে। তাড়াহুড়ো করে বিধিমালার খসড়াটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এজন্য বিষয়টি নজরে আসেনি।
এদিকে মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারণায় সুযোগ রেখে পৌরসভা নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রস্তুতের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে নির্বাচন কমিশন। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনার তার সহজ স্বীকারোক্তি দিলেন।
তবে আইন মন্ত্রণালয় যদি ভেটিংয়ের সময় ওই বিধানটি বাদ দিয়ে দেয়, সবচেয়ে ভালো হবে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কমিশনার। এছাড়া ইসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও বলছেন, ভবিষ্যতে এ বিধানটি থাকবে না। কেননা, মন্ত্রী-এমপি সরকারি সুবিধা না নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় গেলেও তারা মন্ত্রী-এমপিই থেকে যান। তাই পরোক্ষ একটা প্রভাব বিস্তার হয়। যা সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের অন্তরায়।
আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের অপেক্ষায় ইসির খসড়া আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন। তবে সরকারি সুবিধা না নিয়ে প্রচারণা চালাতে হবে।
সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলতে- প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বোঝানো হয়েছে।
গত ২ নভেম্বর স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচনের সংশোধিত আইনের অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর তা ৩ নভেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশ হয়। এরপর তড়িঘড়ি করে নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালা খসড়া চূড়ান্ত করে গত ৫ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় নির্বাচন কমিশন।
৫ নভেম্বর খসড়া বিধিমালা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যেহেতু দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন হচ্ছে তাই, পৌরসভা নির্বাচনেও মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৫
ইইউডি/জেডএস