জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: অবসরে যাওয়া রাষ্ট্রপতিদের ভাতা বৃদ্ধির জন্য জাতীয় সংসদে ‘রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইন-২০১৫’ নামে নতুন একটি বিল সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের বিধান অনুযায়ী বর্তমান রাষ্ট্রপতি অবসরে গেলে ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
সোমবার (০৯ নভেম্বর) রাতে বিলটি উত্থাপন করেন সংসদ কার্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করলে সর্ব সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। গত ৩ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে রাষ্ট্রপতিদের অবসর সুবিধার জন্য ১৯৭৯ সালে প্রেসিডেন্ট পেনশন অর্ডিন্যান্স করা হয়। পরে এটি সংশোধন করা হয় ১৯৮৮ সালে।
উত্থাপিত বিলে রাষ্ট্রপতির পেনশন ভাতা ধরা হয়েছে মূল বেতনের ৭৫ শতাংশ। বর্তমান রাষ্ট্রপতির ৬১ হাজার ২০০ টাকা বেতন হিসেবে অবসরভাতা হয় ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা। আনুতোষিকের পরিমাণ এক বছরের জন্য প্রদেয় অবসরভাতা ততগুণ হবে- যত বছর কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিলে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ৬ মাস রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এমন ব্যক্তি এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আর অবসরভাতা গ্রহণ করে কোনো রাষ্ট্রপতি মৃত্যুবরণ করলে তার স্ত্রী বা ক্ষেত্র মতে স্বামী মাসিক অবসরভাতার দুই-তৃতীয়াংশ হারে আমৃত্যু পাবেন।
তবে নৈতিক স্খলন বা অন্য কোনো অপরাধে আদালতে দণ্ডিত হলে কোনো রাষ্ট্রপতি অবসরভাতা পাবেন না। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক অসাংবিধানিক পন্থায় অবৈধ উপায়ে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন বা হয়েছিলেন মর্মে ঘোষিত কোনো ব্যক্তি অবসর ভাতা বা অন্যান্য সুবিধা লাভের অধিকারী হবেন না বলেও প্রস্তাবিত আইনে বিধান রাখা হয়েছে।
জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ১৯৮১ সালের ৩০ মে পর্যন্ত ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ দুই সাবেক সেনা কর্মকর্তার শাসনামলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন: ইতোপূর্বে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ৫টি বিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলো। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক ‘উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভী (আদায় ও আরোপ) বিল-২০১৫ ও ‘বাংলাদেশ কয়েনজস (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০১৫’ শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী ‘ট্রেডমার্ক (সংশোধন) বিল-২০১৫’ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক ‘পোর্টস (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০১৫’ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির র অ ম ওবায়দুর মোকতাদিও চৌধুরী ‘গণকর্মচারী (বিদেশী নাগরিকের সহিত বিবাহ) বিল-২০১৫’ সম্পর্কে প্রতিবেদন জমা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৫
এসএম/আইএ