ঢাকা: লোকসান কাটিয়ে এবার লাভের মুখ দেখেছে সরকারি পরিবহন সেবা প্রতিষ্ঠান বিআরটিসি (বাংলাদেশ রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন)। লাভের পাশাপাশি বেড়েছে প্রতিষ্ঠানের যানবাহনের বহরও।
সম্প্রতি বিআরটিসির আয়-ব্যয় বিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এ ব্যাপারে বিআরটিসি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি দায়িত্ব নেয়ার সময় বিআরটিসির মাসিক আয় ছিলো ২০ কোটি ৬১ লাখ ২৯ হাজার টাকা। ওই মাসে ব্যয় হয় ২০ কোটি ৩৯ লাখ ৬ হাজার টাকা। উদ্বৃত্ত ছিলো ২৩ লাখ ২৩ হাজার টাকা।
বছর ঘুরে এ বছরের আগস্ট মাসে বিআরটিসি আয় করেছে ২২ কোটি ৫৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। ব্যয় হয়েছে ২০ কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা। উদ্বৃত্ত ছিল এক কোটি ৭০ লাখ।
কমেছে জ্বালানি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয়। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বিআরটিসি বাস ও ট্রাক চলেছে মোট ৪৫ লাখ ৬৩ হাজার ৪২২ কিলোমিটার। প্রতি কিলোমিটারে রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হয়েছে তিন টাকা ৯৪ পয়সা। জ্বালানি খরচ হয়েছে প্রতি কিলোমিটারে ২০ টাকা। টায়ার বাবদ খরচ হয়েছে কিলোমিটারে দুই টাকা ৩৩ পয়সা। এ বছরের আগস্টে এসে গাড়ি চলেছে ৪৬ লাখ ৮৫ হাজার ৮২০ কিলোমিটার। ১ লাখ ২২ হাজার ৩৯৮ কিলোমিটার বেশি চললেও জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমেছে। প্রতি কিলোমিটারে জ্বালানি ব্যয় হয়েছে ১৯ টাকার কিছু বেশি, রক্ষণাবেক্ষণে তিন টাকা ৪৪ পয়সা এবং টায়ার বাবদ খরচ হয়েছে দুই টাকা ২০ পয়সা।
বিআরটিসি সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট অ-জমা ১০ কোটি ৫৫ লাখ ২৩ হাজার ১০২ টাকা থেকে ৩ কোটি ৫১ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৬ টাকা আদায় করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৭ কোটি ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫২৬ টাকা অ-জমা রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
১৭টি বাস ডিপোর ৪৪ জন ম্যানেজারের কর্মকালে এ বাকি পড়েছে। মোট ৩০৬ জন চালক ও কন্ডাকটরের কাছ থেকে পাওয়া যাবে এ বকেয়া।
সম্প্রতি সকলকে অ-জমা রাজস্বের বিষয়ে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং অ-জমা রাজস্বের বিষয়ে দায়ী সকলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের আয় ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখা যায় এ সময়ে আয় ছিলো ৩১১ কোটি ৩৪ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকে জমা করা হয়েছে ২৮৬ কোটি ৫১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। ফলে ব্যাংক অ-জমার পরিমাণ ছিলো ২৪ কোটি ৮২ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
এ সময়কালে ইচ্ছাকৃতভাবে আয় বেশি দেখানো হয়েছে অথবা অর্জিত আয়ের পুরো অর্থ ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাত করা হয়েছে বলে এখন ধারণা করছে খোদ সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি।
অ-জমা হওয়া অর্থের বিষয়টি যাচাই ও এ বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআরটিসি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৫
এসএ/আরআই