রোববার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমাদ জাহিদ হামিদি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৩ লাখ রোহিঙ্গার জন্য একটি ফিল্ড হসপিটাল তৈরি করে দেবে মালয়েশিয়া। ২-৩ মাসের মধ্যে এই হাসপাতাল তৈরি করে দেওয়া হবে।
আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনায় মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তারা আমাদের পাশে আছেন সবসময়।
‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের এই অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং সংহতি প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ার এই উপ-প্রধানমন্ত্রী। ’
রোহিঙ্গা সংকট দেখতে আহমাদ জাহিদ সোমবার (১৬ অক্টোবর) কক্সবাজারে যাবেন বলেও জানান মাহমুদ আলী।
বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে শ্রমশক্তি রফতানি বিষয়ে আলোচনা হয়।
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও অবস্থানের কথা আহমাদ জাহিদকে ব্রিফ করেন মাহমুদ আলী। তিনি জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে ৯ লাখ মিয়ানমারের জোরপূর্বক গৃহহীন নাগরিক আশ্রয়ে রয়েছে। এরমধ্যে ৫ লাখ ৪০ হাজার এসেছে গত ২৫ আগস্টের পর। তিনি মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রীকে জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সেখানকার অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত ও পদ্ধতিগত সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই নৃশংসতার উদ্দেশ্য রাখাইনকে জনশূন্য করা এবং রোহিঙ্গাদের সেখানে ফিরতে বাধা দেওয়া।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে উল্লেখ করেন, মিয়ানমারের জোরপূর্বক গৃহহীন নাগরিকদের বাংলাদেশ মানবিক কারণে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু তাদের যত শিগগির ফিরে যেতে হবে। সমস্যার উদ্ভব মিয়ানমারে এবং সমাধানও সেখানে। তিনি রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে সম্প্রতি মিয়ানমারের একজন মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর করে যাওয়ার কথাও জানান মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রীকে।
বৈঠকে আহমাদ জাহিদ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় বাংলাদেশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এসময় তিনি ৩ লাখ রোহিঙ্গার স্বাস্থ্য সেবার জন্য ফিল্ড হসপিটাল তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
এই সংকট সৃষ্টিতে উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি জাতিসংঘ ও আঞ্চলিক অন্যান্য ফোরামের অবস্থানের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী। তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যক্রমেও সমর্থন জানান। মালয়েশিয়া এই সংকট সমাধানে ঢাকার শীর্ষ অংশীদার হতে পারে জানিয়ে আহমাদ জাহিদ বলেন, এই ইস্যুতে আমরা সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবো।
দুই দিনের সফরে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকায় এসেছেন আহমাদ জাহিদ। তিনি সোমবার রোহিঙ্গা শরণার্থী কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে দুপুরের পর কক্সবাজারে থেকেই বাংলাদেশ ছেড়ে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৭/আপডেট ২১৫০ ঘণ্টা
কেজেড/এইচএ/
** বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া বৈঠক শুরু