সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে জেলা যুগ্ম জজ আদালত-১ এর বিচারক সাদিয়া সুলতানা আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এই নির্বাচন স্থগিত রাখার নিদের্শ দেন।
এ মামলার আইনজীবী জহুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, একজন শ্রমিক নেতার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত করেছেন।
কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে, সে ব্যাপারেও তারা কোনো নির্দেশনা পাননি। আদালত যেভাবে নির্দেশনা দিবেন, সেভাবেই নির্বাচন হবে বলেও জানান এ আইনজীবী।
এর আগে গত ২৪ মে সংগঠনটির ভোটগ্রহণ হয়েছিলো। তবে রাতে ভোট গণনার সময় শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। নির্বাচন কমিশনারদের পিটিয়ে ব্যালট ছিনতাই, গুলি বর্ষণ ও বোমা হামলার ঘটনাও ঘটে। ফলে ওই দিন নির্বাচন হলেও ফল ঘোষণা পণ্ড হয়ে যায়। পরে নির্বাচন কমিশনাররা পদত্যাগ করেন।
নির্বাচনের ফল না হওয়ায় পরে শ্রমিক ইউনিয়নের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
এরপর শ্রম অধিদফতরের বিভাগীয় সহকারী পরিচালক আলমগীর কুমকুম নিজেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। কিন্তু এই নির্বাচন ইউনিয়নের গঠনতন্ত্র মোতাবেক হচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলেন শ্রমিকদের একাংশ।
তাদের অভিযোগ, নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়নি। এতে অযোগ্যদের ভোটার করা হয়েছে। আর বাদ দেওয়া হয়েছে যোগ্যদের। তাছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হতে না পারলেও পাঁচ সদস্যের ওই কমিটির চেয়ারম্যানসহ তিনজনই সরকারি কর্মকর্তা। আবার তফসিল ঘোষণার একমাস পর এবং তিনমাসের ভেতর ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও এ নির্বাচনে মাত্র সাতদিন পরই ভোট গ্রহণের দিন ঠিক করা হয়েছিলো।
এদিকে নির্বাচনে কমিটি প্রায় ৮ লাখ টাকা ব্যয় ধরেছিল। অথচ এ টাকা নেওয়া হয়নি ইউনিয়নের কাছ থেকে। শ্রমিকরা অভিযোগ তুলেছিলেন, ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন তড়িঘড়ি করে এই নির্বাচন করাচ্ছেন। নির্বাচনের খরচের টাকাও তিনি দিচ্ছেন। এমন নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি থেকে দুই সদস্য পদত্যাগ করেন।
পরে গত ১২ অক্টোবর কামরুজ্জামান টুটুল নামে একজন শ্রমিক নেতা নির্বাচন স্থগিত চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। টুটুল বলেছিলেন, তিনি যোগ্য হলেও ভোটার তালিকায় তার নাম নেই। অথচ তিনি এই নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়তেন। তার আবেদন আমলে নিয়ে এ বিষয়ে ব্যাখা দেওয়ার জন্য আদালত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানকে নোটিশ পাঠিয়ে তলব করেন।
পরে রোববার (১৫ অক্টোবর) তিনি আদালতে হাজির হন। এ সময় চেয়ারম্যান আলমগীর কুমকুমের পক্ষে জহুরুল ইসলাম নামে একজন আইনজীবী আদালতে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। পরদিন আদালত এ নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দিলেন।
এ বিষয়ে আলমগীর কুমকুম বাংলানিউজকে বলেন, তিনি কাগজপত্রের অপেক্ষায় আছেন। কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৭
এসএস/জিপি