সোমবার (১৬ অক্টোবর) ভোর থেকে জাল, পলো ও মাছ রাখার পাত্র হাতে নদী তীরে ভিড় করেছেন শত শত মানুষ।
বুড়ির বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাছ ধরার জন্য এসেছেন গ্রাম ও শহরের শত শত মানুষ।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮২ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের সীমানায় শুক নদীতে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বুড়ির বাঁধ এ আটকে থাকা পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদফতর বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়ে।
এরপর শীতের শুরুতে এ মাছ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে এ সময়টাই চলে আসছে বুড়ির বাঁধ এলাকায় মাছ ধরার মিলন মেলা।
ঢোলার হাট থেকে মাছ ধরতে আসা জেলে আইনুল বলেন, প্রথম দিন মাছ ধরতে আশায় আমরা বেশি মাছ ধরতে পারিনি। বুড়ির বাঁধ-এ সামনে অনেক পানি থাকায় মাছ ধরা পড়ে কম। যত পানি কমবে তত মাছ বেশি ধরা পড়বে।
বড়গাঁও ইউনিয়ন থেকে আসা আল মামুন বলেন, প্রতিবছর বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার জন্য এ দিনটির অপেক্ষা করি।
রুহিয়া ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে আসা মামুন বলেন, মাছ ধরার জন্য আমরা কয়েকজন ভোর এসেছি। বুড়ির বাঁধে মাছ ধরতে এসে মনে হচ্ছে, যেন এক মিলন মেলা, যেদিকে তাকাই শুধু মানুষ আর মানুষ।
ঠাকুরগাঁও শহর থেকে মাছ ধরতে আসা বুলবুল বলেন, সকালে মাছ মারতে আসছি সারাদিন মাছ ধরবো, এতে আমার অনেক ভালো লাগে। এখন পর্যন্ত ছোট-বড় সব মিলে ৩/৪ কেজি মাছ ধরেছি।
বুড়ির বাঁধ এলাকার জুয়েল বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও জমে উঠেছে বুড়ির বাঁধে মাছ ধরা। এ সময় আমাদের বুড়ির বাঁধ এলাকার প্রত্যেক বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব দেখতে আসে এবং তারাও আনন্দের সঙ্গে মাছ ধরতে নামে।
এদিকে মাছ কিনতে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও ভিড় করেছেন এখানে। তারা এলাকার মানুষের কাছ থেকে মাছ কিনে তা বাঁধের উপর বিক্রি করছেন।
পাইকারি ব্যবসায়ী সুমন বলেন, ভোর থেকে মাছ কিনছি। এ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকার মাছ কিনেছি। শহরের বাজারে এ মাছ বিক্রি করে বেশ লাভ হবে বলে আশা করেন তিনি।
সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ বলেন, প্রতি বছর এখানে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে মেলা বসে। শুধু গ্রাম নয়, শহরের অনেক মানুষও এখানে মাছ ধরার জন্য ভিড় করেন। মনে হয় এ যেন এক মিলন মেলা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ১৬ অক্টোবর, ২০১৭
আরএ