তবে, ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা থাকবেন এবং থেমে থেমে চালালো হবে উদ্ধার তৎপরতা।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) দেবাশীষ বর্ধন বাংলানিউজকে বলেন, নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এজন্য ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার টিম থাকবে বলেও জানান তিনি।
রোববার (১৫ অক্টোবর) বিকাল ৫টার দিকে ভাঙা বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হতে গিয়ে জিরানি খালে পড়ে নিখোঁজ হয় হৃদয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ২৭ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উদ্ধার অভিযান চালালেও এখনো খোঁজ পাননি শিশুটির।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় খালে জমে থাকা ময়লার স্তুপ কেটে দু’টি পথ তৈরি করে ফায়ার সার্ভিস। পরে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চালান ডুবুরিরা। খালের বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার করে তল্লাশি চালানো হয়।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের উদ্ধারকর্মী (ডুবুরি) মো. রুহুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘খালের অবস্থা খুব ক্রিটিক্যাল। নিচে অনেক ময়লা, পলিথিন ও প্রচুর বাঁশ রয়েছে। পানিও প্রচুর পরিমাণে কালো। ময়লার স্তুপের নিচে গিয়ে অনেক সময় ধরে সার্চ করা হয়েছে। তবে এ পানিতে নেমে বেশিক্ষণ থাকা যায় না’।
সন্তানের কোনো সন্ধান না পেয়ে ভেঙে পড়েছেন মা রোজি আক্তার। আহাজারি করে তিনি বলছিলেন, ‘রোববার দুপুরে আমার ছেলে আদর কইরা আমার মুখে একনলা ভাত খাওয়াইয়া দিছে। কে জানে, হৃদয় খালে পইড়া যায়বো? আমার হৃদয়রে আপনারা খুঁইজা আইনা দেন। আমি একবার আমার ছেলেরে দেখমু’।
‘সাতদিন আগেও কোলের মাইয়ারে (তামান্না) নিয়ে সাঁকো দিয়া ঘরে যাওয়ার সময় পড়ে গেছিলাম। কোমড়ে ব্যথা পাইছি। তখন থেকেই ভাঙ্গা সাঁকো ঠিক করতে কই বাড়ির ম্যানেজার নাসিমাকে। কিন্তু এ কথা বলার পর নাসিমা ক্ষেপে গিয়ে গালিগালাজ করে আমার বুকে ঘুসি মারেন’।
‘আজ যদি সাঁকো ঠিক থাকতো, তবে আজ আমার ছেলে হৃদয় খালে পড়তো না’ - যোগ করেন এই মা।
মুগদার মদিনাবাগের জিরানি খালের পাশে টিনশেড বাড়ির একটি ঘরে ভাড়া থাকেন নিখোঁজ হৃদয়ের পরিবার। মা রোজি ও দিনমজুর বাবা কামালসহ তার দুই বোন সাথি (৯) ও তামান্না (১) একসঙ্গেই বসবাস করতেন।
হৃদয়ের মা রোজি বাংলানিউজকে জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী এলাকায়। তবে ছোটবেলা থেকেই তিনি মুগদার এই মদিনাবাগ এলাকায় বসবাস করে আসছেন। গত তিনমাস ধরে খালের পাশের এই বাড়ির ঘরটি ১ হাজার ৮০০ টাকায় ভাড়া নিয়ে থাকছেন।
স্থানীয়রা জানান, সাঁকোটি দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। এর আগেও এক শিশুসহ তিনজন এ খালে পড়ে মারা গেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৭
এসজেএ/এএসআর