ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শিশু হৃদয়কে উদ্ধারে সহযোগিতা করছে না ওয়াসা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
শিশু হৃদয়কে উদ্ধারে সহযোগিতা করছে না ওয়াসা! শিশু হৃদয়কে উদ্ধারে সহযোগিতা করছে না ওয়াসা, ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: নিখোঁজের ৪৫ ঘণ্টা পার হলেও তিন বছরের শিশু হৃদয়ের এখনও কোনো হদিস মেলেনি। তবে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা। কিছুক্ষণ পর পর খালে নেমে শিশুটির খোঁজ করছেন ডুবুরিরা।

 

রাজধানীর মুগদার মাণ্ডা এলাকার জিরানি খালে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারে ঢাকা ওয়াসার কাছে সহযোগিতাও চেয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। কিন্তু নগরীর সেবা দানকারী এ সংস্থার কাছ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) দেবাশীষ বর্ধন অভিযোগ করেন, উদ্ধার কার্যক্রমে ফায়ার সার্ভিসকে কোনো সহযোগিতা করছে না ঢাকা ওয়াসা।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। খালটি ঢাকা ওয়াসার আওতায়। খালে প্রচুর ময়লা-আবর্জনা রয়েছে। খালের ওপরিভাগে ময়লার স্তুপে শক্ত আবরণ তৈরি হয়ে গেছে। এ ময়লা-আবর্জনা অপসারণে ঢাকা ওয়াসার কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা সাফ না করে দিয়েছে’।

নিখোঁজের ৪৫ ঘণ্টায়ও উদ্ধারে নেই 'ঢাকা ওয়াসা', ছবি: সুমন শেখ‘তবুও আমরা নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি’।

রোববার (১৫ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে জিরানি খালে পড়ে নিখোঁজ হয় তিন বছরের শিশু হৃদয়। বাঁশের ভাঙ্গা সাঁকো দিয়ে পার হতে গিয়ে ওই খালে পড়ে যায়। খবর পেয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকাল থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় খালে জমে থাকা ময়লার স্তুপ কেটে দু’টি পথ তৈরি করে ফায়ার সার্ভিস। পরে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চালান ডুবুরিরা। খালের বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার করে তল্লাশি চালানো হয়।

টানা ২৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর সোমবার সন্ধ্যা ৭টার পর উদ্ধার অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। তবে রাতে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার টিম ঘটনাস্থলে থেমে থেমে উদ্ধার তৎপরতা চালায়।

মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

তবে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪৫ ঘণ্টার বেশি সময় পার হলেও খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ শিশুটির।

সন্তানের কোনো সন্ধান না পেয়ে বেদনায় ভেঙে পড়েছেন মা রোজি আক্তার। আহাজারি করে তিনি বলছিলেন, ‘আমার হৃদয়রে আপনারা খুঁইজা আইনা দেন। আমি একবার আমার ছেলেরে দেখমু’।

মুগদার মদিনাবাগের জিরানি খালের পাশে টিনশেড বাড়ির একটি ঘরে ভাড়া থাকেন নিখোঁজ হৃদয়ের পরিবার। মা রোজি ও দিনমজুর বাবা কামালসহ তার দুই বোন সাথি (৯) ও তামান্না (১) একসঙ্গেই বসবাস করতেন।

হৃদয়ের মা রোজি বাংলানিউজকে জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী এলাকায়। তবে ছোটবেলা থেকেই তিনি মুগদার এই মদিনাবাগ এলাকায় বসবাস করে আসছেন। গত তিনমাস ধরে খালের পাশের এই বাড়ির ঘরটি ১ হাজার ৮০০ টাকায় ভাড়া নিয়ে থাকছেন।

স্থানীয়রা জানান, সাঁকোটি দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। এর আগেও এক শিশুসহ তিনজন এ খালে পড়ে মারা গেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
এসজেএ/এএটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।