ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

হৃদয় নিখোঁজ: ২ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসবে ফায়ার সার্ভিস

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
হৃদয় নিখোঁজ: ২ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসবে ফায়ার সার্ভিস হৃদয় নিখোঁজ: ২ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসবে ফায়ার সার্ভিস

ঢাকা: রাজধানীর মুগদার মদিনাবাগ এলাকার জিরানী খালে পড়ে নিখোঁজ শিশু হৃদয়ের (৩) কোনো খোঁজ মেলেনি। তবে উদ্ধার তৎপরতা এখনো অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

রোববার (১৫ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে ৫৫ ঘণ্টা (মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত) পার হতে চলেছে। তবে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে উদ্ধার কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হলেও থেমে নেই ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার তৎপরতা।

 

শিশুটিকে উদ্ধারের স্থানীয়দের সহযোগিতা পেলেও নগরীর সেবাদানকারী সংস্থা ঢাকা ওয়াসা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কোনো সহযোগিতা পায়নি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।  

মুগদার জিরানী খালটি ঢাকা ওয়াসার আওতাধীন। খালে প্রচুর পরিমাণে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে পানির উপরিভাগে শক্ত স্তুপে পরিণত হয়েছে। এই ময়লা-আবর্জনা অপসারণের বিষয়েও অনেকটা উদাসিন ঢাকা ওয়াসা।  

খালে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করে নিখোঁজ শিশু হৃদয়কে উদ্ধারের বিষয়ে বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে ঢাকা ওয়াসা ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে একটি বৈঠক করবে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স।  

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেনটেইন্যান্স) দেবাশীষ বর্ধন বাংলানিউজকে বলেন, নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আমাদের একাধিক উদ্ধার টিম কাজ করছে, এতে স্থানীয়রা সহযোগিতা করছে। তবে ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি।  

তিনি বলেন, এই খালটি ঢাকা ওয়াসার, প্রচুর ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে খালের উপরে শক্ত স্তরের তৈরি হয়ে গেছে। এগুলো অপসারণের বিষয়ে ঢাকা ওয়াসাকে বলা হলেও তারা আমলে নেয়নি।  

শিশুটিকে উদ্ধার না করা পর‌্যন্ত আমরা হাল ছাড়ছিনা। এরজন্য বুধবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকা ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে একটি বৈঠক করবো আমরা। খাল পরিস্কারের বিষয়ে এই দুই সংস্থার সহযোগিতা প্রয়োজন। নয়তো আমাদের একার পক্ষে এই উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।  

‘আমরা ঢাকা ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা কামনা করছি। ’

এর আগে, রোববার (১৫ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে জিরানী খালে পড়ে নিখোঁজ হয় তিন বছরের শিশু হৃদয়। বাঁশের ভাঙা সাঁকো দিয়ে পার হতে গিয়ে ওই খালে পড়ে যায়। খবর পেয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকাল থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় খালে জমে থাকা ময়লার স্তুপ কেটে বেশ কয়টি পথ (ক্যানেল) তৈরি করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। এ পর্যন্ত খালের বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে তল্লাশি চালিয়েছে ডুবুরিরা। তবে নিখোঁজের ৫৫ ঘণ্টার বেশি সময় পার হলেও হদিস মেলেনি শিশু হৃদয়ের।

সন্তানের কোনো সন্ধান না পেয়ে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন মা রোজি আক্তার। আহাজারি করে তিনি বলছিলেন, ‘আমার হৃদয়রে আপনারা খুঁইজা আইনা দেন। আমি একবার আমার ছেলেরে দেখমু’।

মুগদার মদিনাবাগের জিরানী খালের পাশে টিনশেড বাড়ির একটি ঘরে ভাড়া থাকেন নিখোঁজ হৃদয়ের পরিবার। মা রোজি ও দিনমজুর বাবা কামালসহ তার দুই বোন সাথি (৯) ও তামান্না (১) একসঙ্গেই বসবাস করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী এলাকায়। তবে ছোটবেলা থেকেই তিনি মুগদার এই মদিনাবাগ এলাকায় বসবাস করে আসছেন। গত তিনমাস ধরে খালের পাশের এই বাড়ির ঘরটি ১ হাজার ৮০০ টাকায় ভাড়া নিয়ে থাকছেন।

স্থানীয়রা জানান, সাঁকোটি দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। এর আগেও এক শিশুসহ তিনজন এ খালে পড়ে মারা গেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৭
এসজেএ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।