বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকেই শিশু, কিশোর ও যুবকদের মাঠে নামিয়ে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট পালন করাচ্ছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, দূরপাল্লার বাস বন্ধ রয়েছে। সারি সারি বাস রাখা টার্মিনালে। ঘুরছে না বাসের চাকা। শ্রমিকরা বিচ্ছিন্নভাবে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন। তারা বাঁশ হাতে নিয়ে প্রতিহত করছেন হালকা যানবাহন চলাচল। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা। কেউ ফিরে যাচ্ছেন, কেউবা বিকল্প হিসেবে রেলপথে বেছে নিয়েছেন।
এদিকে, সকাল সাড়ে ১১টায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে বলেন, ‘সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার। শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে!’
এ ব্যাপারে সিলেট সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক বাংলানিউজকে বলেন, ‘ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়নি, অব্যাহত রয়েছে। তবে সাড়ে ১১টায় সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। ’
নিজেদের মধ্যে সংঘাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৮ অক্টোবর) থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘটের ডাক দেয় সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ইউনিয়ন।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সড়ক পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওইদিন বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে অবস্থিত বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, বিএনপি নেতা ও স্থানীয় কুচাই ইউনিয়নের আবুল কালাম দখলীয় হোটেল তাজমহল দখলকে কেন্দ্র বাস টার্মিনালের বর্তমান ইজারাদার সেলিম আহমদ ফলিক গ্রুপ ও সাবেক ইজারাদার যুবলীগ নেতা মহসীন কামরান গ্রুপে মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
হোটেলের দখল নিতে গেলে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মহসীন কামরান পক্ষের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে শ্রমিকরা। এতে গুরুতর আহত হন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর রহমান শাহীন। তিনি এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
অন্যদিকে সেলিম আহদ ফলিক ও শ্রমিক নেতা এবং সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কুচাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম পক্ষের কয়েকজন লোক আহত হন দাবি করে মহসীন কামরান গ্রুপের হামলাকারীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার দাবি করে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক নেতা বলেন, হোটেল তাজ মহল মালিকানা। মালিকের সঙ্গে অপর পক্ষের দ্বন্দ্ব হয়েছে। হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এখানে শ্রমিকদের নিয়ে জড়ানো হয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, হোটেল তাজমহল দখলে দুর্বৃত্তরা শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। তাদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতিতে থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৭
এনইউ/এএটি