তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ। কিন্তু এর পরেও বন্ধ হচ্ছে না ধূমপান।
দেখা গেছে বিমানবন্দর কমপ্লেক্সে যাত্রীদের অপেক্ষার নির্দিষ্ট স্থানের পাশেই রয়েছে স্নাক্সের দোকান। সেখানে তামাক পণ্য বিক্রি হচ্ছে এবং সেখানে বসেই সিগারেট সেবনের ব্যবস্থাও রয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরের বেশ কিছু স্থানে বিমানের লোগো এবং বেসরকারি সংস্থা এসিডি’র লোগো সম্বলিত ধূমপানমুক্ত সতর্কীকরণ নোটিশ প্রদর্শন করা হয়েছে।
কিন্তু এ পাবলিক প্লেসে ধূমপান বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। অথচ বিশ্বের প্রায় সব বিমানবন্দরেই এখন ধূমপান নিষিদ্ধ। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া ধূমপান করা যায় না।
এদিকে, রাজশাহী বিমানবন্দরের ওয়েটিং রুম, ওয়াশরুমে এমনকি অন্য যাত্রীদের সামনেই ধূমপান করতে দেখা যাচ্ছে। সেখানে ধূমপানের পর সিগারেটের অবশিষ্টাংশও ফেলে রাখতে দেখা গেছে। এতে করে শিশু ও নারীরা পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হচ্ছেন।
বিমানবন্দরে আসা একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত যাত্রী ডা. মাহফুজ ভুঁইয়া বলেন, তিনি প্রায়ই বিমানে ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলাচল করেন। এ টার্মিনালে ধূমপানের দৃশ্য প্রতিনিয়তই চোখে পরে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবেই এমনটা হচ্ছে।
এর ফলে এখানে অপেক্ষমান যাত্রীরা পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। এর উপর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের লিজ দেওয়া দোকানেই এখানে তামাকপণ্য বিক্রি হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষকে আইনের আওতায় ধূমপানকারীদের শাস্তির নিশ্চিত করলে তবেই এ সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিমানবন্দরে অপেক্ষামান ইয়াসমিন আরা নামের এক নারী যাত্রী বলেন, তিনি অনেকক্ষণ ধরে সেখানে বসে আছেন। এর মধ্যে কয়েকজনকে ধূমপান করতে দেখেছেন। এতে করে নারী-শিশুসহ অধূমপায়ীরাও পরোক্ষভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। তাই বিমানবন্দরের ভেতর থেকে তামাকপণ্য বিক্রির দোকান তুলে দেওয়ার দাবি জানান এ নারী যাত্রী।
তামাকবিরোধী জোটের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী এসিডি’র প্রোগ্রাম ডিরেক্টর শারমীন সুবরীনা বলেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত সংগঠন এসিডি’র পক্ষ থেকে বিমানবন্দর ধূমপানমুক্ত রাখতে ও যাত্রীদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য যাত্রী বিশ্রামাগার, ভিআইপি লাউঞ্জ, বহির্গমন টার্মিনালসহ বিমানবন্দরের একাধিক স্থানে দফায় দফায় পর্যাপ্ত সতর্কতা নোটিশ টাঙানো হয়েছে। এছাড়া এক সময় বিষয়টি মনিটরিং করতেন তারা।
কিন্তু এখন বন্দর কর্তৃপক্ষের বাড়তি নিরাপত্তার কারণে তাদের কর্মীরা যখন তখন বন্দরে ঢুকতে পারেন না। তবে বিমানবন্দরে ধূমপান বন্ধের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। তারা এরই মধ্যে এ বিষয়টি জেলা টাস্কফোর্সকে জানিয়েছেন। তারা যদি আইনের যথাযথ প্রয়োগ না করে আইনের সুফল জনগণ ভোগ করতে পারবেন না। আইন প্রয়োগের অভাবেই এমনটা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জানতে চাইলে রাজশাহীর শাহ মখদুম (রহ.) বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সেতাফুর রহমান বলেন, আইনটি তারাও জানেন। কিন্তু তার কমপাউন্ডের মধ্যে ধূমপান চলছে বা তামাকপণ্য বিক্রি হচ্ছে তা জানা নেই। তিনি কালই খোঁজ নিবেন। এমনটি হয়ে থাকলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান বিমানবন্দরের এ শীর্ষ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৭
এসএস/ওএইচ/