এ সময়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মা ইলিশ শিকারের দায়ে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ৫৮০ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং ১০ মেট্রিক টন ইলিশ ও ৪০ দশমিক ৩১ লাখ মিটার অবৈধ জাল জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় মৎস্য অফিসের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আজিজুর রহমান।
তিনি জানান, গত ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের নেতৃত্বে মোট ২ হাজার ৯২টি অভিযান ও ৯৬৮টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। যার অনুকূলে ৭০৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি এ পর্যন্ত বেশ কিছু নৌকা ও ট্রলারও জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে চলতি বছরের হিসেব অনুযায়ী গত বছরের চেয়ে এবার কয়েকগুন বেড়েছে অভিযান, মোবাইল কোর্ট, আটক, জেল-জরিমানার পরিমাণ।
গত বছর বরিশাল বিভাগে মোট আটক জেলের সংখ্যা ছিলো ২৭৩ জন, যা এবছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩৩ জন। পাশাপাশি গত বছরের চেয়ে এ বছর ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা বেশি জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং ১০ লাখ ৪০ হাজার মিটার অবৈধ জাল ও ৬ মেট্রিকটন বেশি ইলিশ বেশি জব্দ করা হয়েছে।
গত বছরের তুলনায় এ বছর ২২৬টি অভিযান, ১৩টি মোবাইল কোর্ট ও ৩৪৫টি মামলা বেশি দায়ের করা হয়েছে। গত বছর অভিযান হয়েছিলো ১ হাজার ৮৬৬টি, মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছিলো ৯৫৫টি ও মামলা হয়েছিলো ৩৬০টি।
অপরদিকে বরিশাল বিভাগের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি ৬৪৮টি অভিযান পরিচালনা করেছে বরিশাল জেলা। যেখানে সবচেয়ে বেশি আটক-জেল হয়েছে ৩৩২ জনের।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা (হিলসা) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, মূলত নদীতে মাছ বেশি থাকায় অসাধু জেলেরা ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময় নেমে থাকে। এবছর মৎস্য বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সুষ্ঠু ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আইন অমান্যকারীদের আটক করে।
আর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. তপন কুমার পাল বলেন, মৎস্য বিভাগের প্রতিটি সদস্য ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সমন্নিতভাবে নদী পাহারা দিয়েছে। জনপ্রতিনিধি থেকে সাধারণ মানুষ নিধন বন্ধে সহায়তাও করেছে। জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় সর্বোচ্চ নজরদারি রাখা হয়েছে। পাশাপাশি যেখান থেকেই তথ্য পাওয়া গেছে সেখানেই অভিযান চালানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অভিযান চালাতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানান সমস্যায় পড়লেও আইন অমান্যকারীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। তবে এ সম্পদ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে জাটকা নিধন বন্ধ ও প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকার বন্ধের কারণে গত কয়েকবছর ধরে দেশে ইলিশের পরিমাণ বেড়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. বজলুর রশিদ বিভাগীয় এ অভিযানকে সফল বলে দাবি করে বলেন, আগামী ১ নভেম্বর থেকে জাটকাবিরোধী অভিযান শুরু হচ্ছে, যা চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
এমএস/জেডএস