বন্যার পর অনেক এলাকায় স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে ব্রিজ বা কালভার্টের উপর বাশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। সাঁকো দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতে পারলেও যাতায়াত করতে পারছেনা কোনো যান।
অনেক ক্ষেত্রে বাঁশের সাঁকো দুর্বল হওয়ায় প্রয়োজনের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। তাই অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে নিজেকে গুটিয়ে রেখে অতিরিক্ত পাঁচ থেকে সাত কিলো রাস্তা বেশি পারি দিতে হচ্ছে।
সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, কালভার্ট-সেতু থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত সংস্কার না হওয়ায় দিনাজপুরের বন্যাকবলিত এলাকার মানুষেরা এখনও সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন।
দিনাজপুর জেলার উপর দিয়ে সম্প্রতিক স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ৯৩টি সেতু ও কালভার্টসহ ২৬৭ কিলোমিটার রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাস্তাঘাট, ব্রিজ মেরামত না হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে অর্ধ শতাধিক গ্রাম। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করতে হচ্ছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষদের। জনসাধারণের চলাচলের জন্য উপযোগী করতে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, ব্রিজ মেরামত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের কাশিমনগর এলাকার স্কুল ছাত্র মো. লিটন জানান, আত্রাই নদীর শাখা গড়ফুতু উপর মুল ব্রিজ ভেঙ্গে আশপাশের ৭ থেকে ৮টি গ্রামের মানুষ যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। পরে তাও মানুষের চলাচলে সাঁকোটিও দুর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য অনেকেই ঝুঁকি না নিয়ে ৫-৭ কিলোমিটার রাস্তা বেশি ঘুরে যাচ্ছেন। এজন্য চরম অসুবিধার সন্মুখীন হতে হচ্ছে স্কুল-কলেজ গামী শিক্ষার্থীদের। তবে অধিকাংশরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এর ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
বিরল উপজেলার চৌমুহনি এলাকার ধান ব্যবসায়ী মহসিন আলী জানান, বন্যায় পূর্ণভবা রেলব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় একটি সেতু ও কালভার্ট বিধবস্ত হওয়ার পর থেকেই এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তাদের। বিকল্প পথ দিয়ে যাতায়াতে অতিরিক্ত পথ ও খরচা গুনতে হচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল রাস্তাঘাট, কালভাট-সেতু মেরামত দ্রুত করতে সরকারের প্রতি জোরদাবি করছি।
দিনাজপুর এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সকল রাস্তাঘাট, কালভার্ট-সেতু মেরামত কাজ শুরু হয়ে আগামী জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তবে যতো দ্রুত অর্থ বরাদ্দসহ বিভাগীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ততো দ্রুত কাজ শুরু ও সম্পন্ন হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুর জেলার ৯৩টি সেতু-কালভার্ট ও ২৬৭ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেতু ও রাস্তাঘাট পুনর্নির্মাণ ও মেরামত করতে ৯৬ কোটি টাকার প্রয়োজন। চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে, অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
বিএস