বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা হাঁটা শুরু করেছি, গন্তব্যে পৌঁছাবই।
মন্ত্রী জানান, তারা বলেছেন তারা (রোহিঙ্গারা) আসতে চায় না। আমরা বলেছি, কেনো যেতে চায় না। তাদের আগে পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য কফি আনান কমিশনের সুপারিশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ৫ দফা প্রস্তাব সামনে রেখে পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য ৩০ নভেম্বরের মধ্যে একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। টার্মস অব রেফারেন্স (টিওআর) তৈরি হয়েছে। শিগগিরই আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সে দেশে যাবেন। তার যাওয়ার পরেই সব চূড়ান্ত হবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ ঠিক করবে কিভাবে কাজ করবে।
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার বার বার বলার চেষ্টা করেছে, যারা বাংলাদেশে এসেছে তারা বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা এর জোরালো প্রতিবাদ করেছি, বলেছি সারা বিশ্বে ৩৫ কোটি মানুষ বাংলায় কথা বলে। তাহলে তারাও কি বাঙালি? যারা এসেছে তারা বাংলা ভাষা বোঝেও না, বাংলায় কথাও বলতে পারে না। তারা আরাকান ভাষায় কথা বলে। আর বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো লাইন এলাকায় এসে স্থলমাইন পুতে রাখা হয়েছে এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের কাছে কিছু বলা হয়েছে কী না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি আন্তর্জাতিক রুল ভঙ্গ করে সীমান্তের জিরো লাইনে স্থলমাইন পুতে রাখা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, এটা দুষ্কৃতিকারীরা করেছে। তাদের সেনাবাহিনী ও তাদের পুলিশ সেটা পরিষ্কার করবে।
মিয়ানমার সরকার কোনটাই অস্বীকার করেনি, মানা করেনি। তারা বলেছে তারা ফিরিয়ে নেবে। আমরা কোনো কিছুই নেগেটিভলি দেখি না। আমাদের একটাই কথা আমাদের ঘাড়ে যেহেতু পড়েছে আমরা এর সমাধান করবোই।
তিনি বলেন, যারা এখানে এসেছে তারা সব হারিয়ে এসেছে। আমাদের এখানে ১ মিলিয়ন মিয়ানমারের নাগরিক এসেছে। সেখানে মাইলের পর মাইল ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের সেটা বলেছি।
সু চি রোহিঙ্গাদের ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন কি না? এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, না, আমার কাছে এমন শব্দ আসেনি। আমরাও রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করিনি। আমরা বলেছি তাদের নাগরিক তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। তারা বলেছেন নেবেন।
মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে দুষ্কৃতিকারীদের কোনো তালিকা দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে কামাল বলেন, একটা তালিকা দিয়েছে। কিন্তু নাম-ঠিকানাবিহীন এভাবে একটি নামের অর্ধ অক্ষর বা অর্ধেক শব্দ দিয়ে খুঁজে বের করা দুঃসাধ্য ব্যাপার। আমরা বলেছি বিস্তারিত দিতে।
তারা বলেছে, ৮ আগস্ট ও ২৪ আগস্ট সেখানে কিছু দুষ্কৃতিকারী তাদের সেনাবাহিনী ও পুলিশের ওপর হামলা করেছে। আমরা আগেও নিন্দা করেছি, এখনও প্রতিবাদ করি। তাদের এও বলেছি, তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে না নিলে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের সঙ্গে এরা সম্পৃক্ত হতে পারে। এতে আমাদেরও সমস্যা, তাদেরও সমস্যা। তাই সেদেশে যাতে শান্তি ফিরিয়ে আসে, আবার আমরাও যাতে শান্তিতে থাকতে পারি সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
রোহিঙ্গার সঙ্কটের মধ্যে গত সোমবার (২৩ অক্টোবর) মিয়ানমার সফরে যান কামাল। নে পি দোতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭/আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা
এসএম/আরআর