ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অপচিকিৎসায় অন্ধ মেয়েটি পৃথিবীর আলো দেখতে চায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
অপচিকিৎসায় অন্ধ মেয়েটি পৃথিবীর আলো দেখতে চায় অপচিকিৎসায় অন্ধ হয়ে যাওয়া সাথী

ঢাকা: মানুষের অনিশ্চিত জীবনে কখন কী ঘটে বলা মুশকিল। আনন্দ উচ্ছ্বাস আর বাবা-মায়ের ভালোবাসায় বেড়ে ওঠা সাথীই যেন তার প্রমাণ। একসময়ের সুস্থ সবল আর চঞ্চল মেয়েটি গ্রামের অশিক্ষিত কবিরাজের অপচিকিৎসায় অন্ধ হয়ে গেছে! অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে না পারায় গত ১০ বছর ধরে তার দু’চোখে সীমাহীন আঁধার।

টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার নবগ্রাম উত্তরপাড়ার শাজাহান শেখের মেয়ে সাথী তখন ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। একদিন রাতে তার মা বাসায় না থাকায় বাবা আদর করে দুধ ও কলা খাওয়ান।

দুধ-কলা খাওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই শুরু হয় বমি। এভাবে টানা ৮ মাস বমি হবার পর ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারাতে থাকে সাথী। এরই মধ্যে বাবা-মায়ের সংসারটিও ভেঙে যায়। এরপর বাবা-মা পৃথক সংসার শুরু করেন। তখনই অসহায় হয়ে পড়ে সাথী, থাকতে শুরু করে নানা-নানীর কাছে।

অভাব অনটনের মধ্যেই সাথীকে গ্রামের অশিক্ষিত কবিরাজ দিয়ে ভূতে ধরার চিকিৎসা করান তার নানা। কবিরাজ ভূত তাড়ানোর নামে অসহায় সাথীর ওপর চালায় নির্মম অত্যাচার। অপচিকিৎসায় পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায় সাথী। কিছুদিন পর তার নানা-নানী মারা গেলে উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় নির্মম অবস্থায় পড়ে অন্ধ মেয়েটি। এরপর থেকে বৃদ্ধা দাদীর কাছে থেকে মানুষের সামান্য সহায়তায় চলছিলো সে। বর্তমানে গোপালপুর উপজেলার চর চতিলা গ্রামের রুবেল আহমেদের আশ্রয়ে রয়েছে অসহায় মেয়েটি।

সাভারের জামগড়া এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন সাথীর মা। সময়-সুযোগ পেলে দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে মাঝে মধ্যে সাথীকে নিয়ে রাখার চেষ্টাও করেন তিনি।

সাথীর বর্তমান আশ্রয়দাতা রুবেল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, সাথীর কষ্টের ইতিহাস জানার পর আমার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছি। ইতিমধ্যে তার চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সাথীর খোঁজ নিয়ে প্রতিবন্ধী তালিকায় নিবন্ধন করে নিয়ে গিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গোপালপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোস্তফা হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, আগে ভুলবশত তার নাম বাদ পড়ে যায়, পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে সাথীর নাম নিবন্ধন করে নিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
ডিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।