রোববার (২৯ অক্টোবর) সকালে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। নিহত আজিজা খাতুন খৈনকুট এলাকার আবদুস সাত্তারের মেয়ে ও খৈনকুট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
পরিবারের লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে খৈনকুট এলাকার প্রবাসী সালাম মিয়ার স্ত্রী বিউটি বেগমের মোবাইল ফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় ভাতিজি আজিজা খাতুনকে সন্দেহ করেন বিউটি। এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিকভাবে ঝগড়া চলে আসছিল। একপর্যায়ে বিউটি আজিজাকে আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকিও দেন। এরই জের ধরে শুক্রবার দুপুরে নিখোঁজ হয় আজিজা। রাত নয়টার দিকে আশপাশের লোকজন বাড়ির পাশে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় আজিজাকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান।
অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজিজার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় শনিবার রাত ১১টায় শিবপুর থানায় বিউটিকে প্রধান আসামি করে সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে নিহত কিশোরীর বাবা আবদুস সাত্তার। মামলার অন্য আসামিরা হলেন-বিউটির মা সানোয়ারা বেগম, চাচাতো ভাই রুবেল ও ফুফু শাশুড়ি তমুজা বেগম। বাকি তিন আসামির পরিচয় অজ্ঞাত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিউটির স্বামী সালাম মিয়া তিন মাস আগে মালয়েশিয়া যান। এরপর বিউটি এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি কিশোরী আজিজা তার চাচির পরকীয়ার ঘটনা দেখে ফেলে। এ জন্য বেশ কিছুদিন ধরে আজিজাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বিউটি। এ জন্য তিনি তার চাচাতো ভাই রুবেল, মা সানোয়ারা বেগম ও ফুফু শাশুড়ি তমুজা বেগমকে ডেকে আনেন। এতে আরও বলা হয়, পরে মোবাইল ফোন চুরির নাটক সাজিয়ে আজিজা সেটি চুরি করেছে বলে অপবাদ দেয়া হয়। এরপর শুক্রবার বিউটিকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে হাত-মুখ বেঁধে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে শিবপুর মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মুজিবুর রহমান বলেন, কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার আলামত পাওয়া গেছে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় মিজান ফরাজী ও তার ছেলে আল-আমিনকে যশোর বাজার থেকে গ্রেফতার করেছে শিবপুর থানা পুলিশ। অন্যান্য আসামিদের শিগগিরই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, ২৯ অক্টোবর, ২০১৭
আরএ