যমুনার এই ঘাট ব্যবহার করে নৌকা যোগে জামালপুর, সারিয়াকান্দি, সিরাজগঞ্জ, কাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করেন। আনা নেয়া হয় পণ্যও।
বিশেষ করে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া পরপর দু’দফা বন্যায় সড়কটির দশা হয় বেহাল। বন্যার পানি অনেক আগে নেমে গেলেও আইনি জটিলতার অজুহাত তুলে সংশ্লিষ্টরা সড়কটি নতুন করে মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি। ফলে দুর্ভোগে পড়েন ওই ঘাট ব্যবহারকারী হাজার হাজার মানুষ।
এ অবস্থায় সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেন হযরত আলী সরকার নামের স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী। ব্যক্তিগত টাকায় সড়ক সংস্কার কাজে নেমেছেন তিনি।
যমুনা পাড়ের শহড়াবাড়ী গ্রামে বাড়ি হযরত আলী সরকারের। ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্যও ছিলেন তিনি। বর্তমানে একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) ব্যবসায়ী হযরত আলী সরকার বাংলানিউজকে বলেন, যমুনার নদীর এই ঘাট ঘিরে ভাঙনকবলিত জনপদের হতদরিদ্র মানুষগুলো বিভিন্ন পেশার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তাদের মধ্যে আমিও একজন। কিন্তু সড়কের বেহালদশার কারণে ঘাটের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ অনেকটা বিচ্ছিন্ন বর্তমানে। সবার মত আমিও অনেকটা বেকারের মত জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, জেলা পরিষদ থেকে শহড়াবাড়ী ঘাট বার্ষিক ইজারা নিয়েছি। এ ঘাটের আয় দিয়ে আমার সংসার চলে। তাই এলাকার মানুষ ও নিজের বিষয়টি মাথায় রেখে গত ২৭ অক্টোবর থেকে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করেছি। কোথাও মাটি ভরাট, কোথায় প্যালাসাইটিং ও অনেক স্থানে ইট বিছানো হচ্ছে। কাজ শেষ হতে আরও দু’দিন সময় লাগতে পারে। এতে তার প্রায় ২ লাখ ব্যয় হবে; যোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতা হযরত আলী সরকার।
প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক, ইব্রাহিম হোসেন, আব্দুল জলিলসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, সড়কটি সংস্কার হলে ব্যক্তির চেয়ে এলাকার লোকজন সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। সঙ্গে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের সমাপ্তি ঘটবে। ব্যবসায়ী হযরত আলী সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অর্থায়নে এই সড়কটি পাকা করা হয়। যমুনা নদীর ভাঙনরোধে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের নির্মাণ সামগ্রী ইট, সিমেন্ট, জিওটেক্স, পাথরসহ নানা উপকরণ এই পথেই পরিবহন করা হয়। ঘাটের বিপরীত প্রান্তে যমুনা নদীর পূর্ব পাড়ে রয়েছে তারাকান্দি সার কারখানা। সেখান থেকে নৌপথে আসা সার শহড়াবাড়ী ঘাট হয়ে এই পথেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যায়।
সদ্য বদলি হওয়া এলজিইডি’র ধুনট উপজেলা প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, যমুনা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ায় বাঁধের পূর্বদিকের সড়কের কিছু অংশ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। সড়কটি মেরামতের কোন পরিকল্পনা আপাতত নেই কর্তৃপক্ষের; যোগ করেন এই প্রকৌশলী।
ধুনট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রিয়াজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বরাদ্দ না থাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি আপাতত তাদের পক্ষে মেরামত সম্ভব হচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআই