ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মা-ছেলে হত্যার দায় স্বীকার জনির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৭
মা-ছেলে হত্যার দায় স্বীকার জনির

ঢাকা: রাজধানীর কাকরাইলে মা-ছেলে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন গ্রেফতার হওয়া আল আমিন জনি।শনিবার (০৪ নভেম্বর) ভোরে মামলার এজারভুক্ত তিন নম্বর আসামি জনিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৩।

বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ৪ বছর আগে অভিনেত্রী শারমিন মুক্তার সঙ্গে বিয়ে হয় আবদুল করিমের।

বর্তমানে মুক্তা তার মা ও ভাই জনিকে নিয়ে পল্টনের একটি বাসায় থাকতেন। করিমের প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহারের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ার পর করিমও তাদের সঙ্গে থাকতেন।

জনির ভাষ্য অনুযায়ী মুফতি মাহমুদ বলেন, বিয়ের পর থেকে করিম ও মুক্তার মধ্যে বিভিন্ন আর্থিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। করিমের অধিকাংশ সম্পত্তির মালিক প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার হওয়ায় এ নিয়ে মুক্তার মধ্যে অসন্তোষ ছিল।

প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহারের প্ররোচণায় তিন-চার মাস আগে তৃতীয় স্ত্রী মুক্তাকে ডিভোর্সের প্রক্রিয়া শুরু করেন করিম। বোনের স্বার্থ বিবেচনায় পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী শামসুন্নাহারকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন জনি।

জনি র‌্যাবকে জানায়, ঘটনার আগের দিন ৩১ অক্টোবর জনি নিউমার্কেট থেকে ১১০০ টাকায় একটি ছুরি কিনে আনেন। ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় কাকরাইলের বাসায় ঢুকে শামসুন্নাহারের ছোট ছেলে শাওনকে ছুরিকাঘাত করে চুপ করে বসে থাকতে বলেন। পরে টার্গেট শামসুন্নাহারকে এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে শাওনের গলাতেও ছুরি দিয়ে আঘাত করেন জনি।

তখন শাওন দৌড়ে নিচে নামতে চাইলে জনি তাকে থামতে বলেন চতুর্থ তলার সিঁড়িতে শাওন পড়ে যায়। এ সময় তাদের ছুরিকাঘাত করার সময় জনিরও দু’টি আঙ্গুল কেটে যায়। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় জনিই দারোয়ানকে বলেন, উপরে মারামারি হচ্ছে।

জনি আগে থেকেই একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ব্যাগে করে জামা-কাপড় রেখে যায়। সেখানে গিয়ে রক্তাক্ত পোশাক পরিবর্তন করে ভিন্ন নামে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। তারপর ঢাকাতেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেন এবং পরে গোপালগঞ্জে আরেক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে যান জনি।

এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ বলেন, খুনের পরিকল্পনায় করিম ও মুক্তা জড়িত কি না আমরা এখনো জানতে পারিনি। খুনের সময় জনির সঙ্গে বাড়ির আশেপাশে আরো কেউ ছিল কি না তা তদন্তের পর বেরিয়ে আসবে।

বুধবার (১ নভেম্বর ) সন্ধ্যায় কাকরাইলে ৭৯/এ নম্বর বাড়িতে ছুরিকাঘাত ও গলাকেটে শামসুন্নাহার (৪৫) ও তার ছেলে শাওনকে (১৮) হত্যা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৭
পিএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।