প্রতিবারের মতো এবারও কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে অনারম্ভরভাবে পালিত হলো এ উৎসব। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকেও মনিপুরী সম্প্রদায়সহ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপভোগ করেছেন এই মহারাসলীলা।
শনিবার (৪ নভেম্বর) মনিপুরী ঐতিহ্যের ১৭৪তম বাৎসরিক উৎসব উত্তর ছয়শ্রী মহাপ্রভু মণ্ডপে ভোর ৫টায় মঙ্গল আরতির মাধ্যমে শুরু হয়ে চলে রোববার (৫ নভেম্বর) ভোর রাত পর্যন্ত।
মহারাসলীলা উদযান কমিটির সহ সভাপতি বীরেশ্বর সিংহ বাংলানিউজকে জানান, সকালে মঙ্গল আরতির মাধ্যমে উৎসব শুরুর পর দুপুর ১টায় মহাপ্রভুর ভোগ আরতি ও মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শ্রী কৃষ্ণের গোচারণ লীলা এবং রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত চলে মহারাসলীলা।
রাতের অনুষ্ঠান হয় আকর্ষণীয়। সেখানে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট এম আকবর হোসেইন জিতু, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান চৌধুরী, শামীম আহছান, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মো. ফরিয়াদসহ অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরও জানান, মহারাসলীলা উপলক্ষে বসে গ্রাম্য মেলা সেখানে কৃষি সরঞ্জাম, মাটির তৈরি জিনিসপত্র, ঘর কন্যার সামগ্রীসহ নানা দ্রব্যের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা।
মহারাসলীলায় শিশু থেকে শুরু করে কিশোর কিশোরী সবার স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে রাতের বেলায় রাস উৎসব হয়ে ওঠে সবচেয়ে আকর্ষণীয়।
রাসলীলার শুরুতেই পরিবেশিত হয় অপূর্ব মৃদঙ্গ নৃত্য। মৃদঙ্গ নৃত্য শেষে প্রদীপ হাতে নৃত্যের তালে তালে সাজানো মঞ্চে প্রবেশ করেন শ্রী রাধা সাজে সজ্জিত একজন নৃত্যশিল্পী বৃন্দা। নৃত্যের সঙ্গে বাদ্যের তালে তালে পরিবেশিত হয় মনিপুরী বন্দনা সঙ্গীত। শ্রীকৃষ্ণ রূপধারী বাঁশি হাতে মাথায় কারুকার্য্য খচিত ময়ূর গুচ্ছধারী এক কিশোর নৃত্যশিল্পী তার বাঁশির সুর শুনে রজগোপী পরিবেশিত হয়ে শ্রী রাধা মঞ্চে আসেন। শুরু হয় সুবর্ণ কংকন পরিহিতা মনিপুরী কিশোরীদের নৃত্য প্রদর্শন। স্থানীয় শিল্পীদের এ পরিবেশনা সবাইকে বিমোহিত করে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৯ ঘণ্টা, ০৫ নভেম্বর, ২০১৭
আরএ