নির্যাতনের শিকার ওই দুই শ্রমিক হলেন, খুলনার দৌলতপুর থানার গিলাতলা এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে রাসু হোসেন (২৭) এবং পিরোজপুরের ইন্দুরকানি থানার চরবলেশ্বর এলাকার খলিল মিয়ার ছেলে শাহিন আলম (২০)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই এলাকায় হাবিবুর রহমান ও মহসিনের বাসায় ভাড়া থেকে ওই কারখানায় চাকুরী করতো শাহিন ও রাসু।
নির্যাতনের শিকার দুই শ্রমিক শাহিন ও রাসু সাংবাদিকদের জানান, সকালে তাদের দুজনকে নিজ নিজ বাসায় থেকে ডেকে কারখানায় ডেকে নেয়া হয়। পরে কারখানার কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ শিপন পাটোয়ারী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কবির হোসেন। এ সময় তাদের চোর অপবাদ দিয়ে দুই হাত জানালার গ্রিলের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে ও গলায় চোর লিখা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে মারধর করে। এক পর্যায়ে চিৎকার চেচামেচি করলে মুখে কাপড় গুজে দেয়। নির্যাতন সইতে না পেরে শাহিন সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। পরে দুপুরের দিকে সাদা কাগজসহ কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাদের দুজনের চাকুরী চ্যুতির নোটিশ দিয়ে কারখানার থেকে বের করে দেয়। এ সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধে অপারগতা প্রকাশ করেন। আওয়ামীলীগ নেতা কবিরের নেতৃত্বে কয়েকজন তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে দ্রুত এলাকা থেকে চলে যেতে বলে। শাহিনের ভাড়া বাসার সামনে কারখানার একটি সীসার দন্ড পাওয়া যায়। এর জের ধরে তাদের চোর সাব্যস্ত করে নির্যাতন করা হয়।
এ ব্যাপারে কারখানার কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ শিপন পাটোয়ারী বলেন, শাহিন ও রাসুকে পুলিশে দিলে ঝামেলা হতো। চুরি করায় তাই সামান্য শাস্তি দিয়েছি। তাদের চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কবির হোসেন জানান, আমরা এই কারখানায় ব্যবসা করি। তাই কারখানার বিষয়ে অনেক সময় অনেক কিছু করতে হয়। ছেলে দুটি চোর ছিল তাই তাদের শাস্তি দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নির্যাতনের শিকার দুই শ্রমিক শাহিন ও রাসু থানায় অভিযোগ দেয়নি। তারা অভিযোগ দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘন্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৭।
আরএস/এমএমএস