ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মেট্রোরেলের কাঠামো দাঁড় করাতে নির্ঘুম শ্রমিকরা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৭
মেট্রোরেলের কাঠামো দাঁড় করাতে নির্ঘুম শ্রমিকরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ- ছবি- ডি এইচ বাদল

ঢাকা: ২০২০ সালের মধ্যে রাজধানীর মতিঝিল (বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন) পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হলেও প্রথম পর্যায়ে ২০১৯ সালের মধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত বাণিজ্যিক চলাচল শুরু করা হবে। এ লক্ষ্যে মেট্রোরেলের (মেট্রোরেল রুট-৬) কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে। দিন-রাত পরিশ্রম করে মেট্রোরেলের কাঠামো দাঁড় করানো হচ্ছে।

বুধবার (০৮ নভেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে দেখা গেছে, রাজধানীর আগারগাঁও মোড় থেকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত চলছে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ। সারি সারি ট্রাকে আসছে কংক্রিটের ব্লক।

ক্রেনের সাহায্যে এগুলো মাটিতে নামাচ্ছেন শ্রমিকরা। মেট্রোরেলের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা।
 
মেট্রোরেলের কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠান ইটাল-থাই-এর প্রকৌশলী ওলিউল হক বলেন, মেট্রোরেলের কাজ থেমে থাকে না। ২৪ ঘণ্টাই চলে। কারোর চোখে ঘুম নেই, টেস্ট পাইল পরীক্ষা সামনে। দেশি-বিদেশি বসদের চাপ, ২০১৯ সালের মধ্যেই ঢাকায় চলবে মেট্রোরেল।

প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ১৫-২০ জন শ্রমিক কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন। কেউ বিশাল বিশাল লোহার গার্ডার নামাচ্ছেন। অনেকে আবার রড ঝালাইয়ের কাজ করছেন। এই রুটে ১২ নভেম্বর (রোববার) পাঁচটি পিলারে লোড টেস্ট হবে। সেজন্যই এতো ব্যস্ততা। এর পরেই শুরু হবে সড়কে মূল পিলার নির্মাণ কাজ।
 
প্রকৌশলী ওলিউল হক বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেলের কাজ ২৪ ঘণ্টাই চলে। কাজের ধরন দিনে একরকম, রাতে আরেক রকম। যেমন- লোড টেস্ট করার জন্য রাতে কংক্রিকেটর হেভিওয়েট ব্লক আসছে। প্রতিটি ব্লকের ওজন ৫ থেকে ৬ টন। রাতে এগুলো নামানো সুবিধা।

দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ 
ক্রেনের সাহায্যে নামানো ব্লকগুলো দেখভাল করছেন ফোরম্যান আব্দুল কাদের। সবার কাজের ভিন্ন ভিন্ন ভাগ রয়েছে। কংক্রিকেটর ব্লকবোঝাই ট্রাকগুলো সারি সারি করতে সহায়তা করছেন তিনি। রাতভর কাজের প্রসঙ্গে ফোরম্যান আব্দুল কাদের বলেন, কাজ দ্রুত শেষ করতে আমাদের তাড়া দেওয়া হচ্ছে। সে জন্যই আমাদের ঘুম হারাম। দিনে-রাতে শিফট ভাগ করে আমরা কাজ করছি।
 
শেরে-বাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গেট থেকে পল্লবী রুটে রাতভর চলছে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ।   বিশ্ববিদ্যালয় গেট থেকে আগারগাঁও মোড় পর্যন্ত মূল সড়কের আইল্যান্ড তুলে ফেলা হয়েছে। আইল্যান্ড তুলে কংক্রিটের বেড়া দিয়ে ঘেরা হয়েছে। এর ওপরে বিভিন্ন ধরনের লাইটিং করে চলছে মাটির পরীক্ষার কাজ।
 
বর্তমানে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কয়েকটি স্থানে মেট্রোরেল প্রকল্প অথবা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (এমআরটি) লোড টেস্ট ও মাটি পরীক্ষামূলক কাজ করা হচ্ছে।
 
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্যাকেজ-৩ ও প্যাকেজ-৪-এর আওতায় উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভায়াডাক্ট (উড়াল রেলপথ) ও নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে চার হাজার ২৩০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের মধ্যে এ কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
 
এই দুই প্যাকেজের ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (ইটাল-থাই) এবং চীনের প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। প্যাকেজ-২-এর আওতায় এক হাজার ৫৯৬ কোটি টাকায় মেট্রো রেলের ডিপোও নির্মাণ করবে ইটাল-থাই ও সিনোহাইড্রো।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৭
এমআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।