ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রূপগঞ্জে স্ত্রীর হাত-পা থেতলে দিলো স্বামী

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৭
রূপগঞ্জে স্ত্রীর হাত-পা থেতলে দিলো স্বামী রূপগঞ্জে স্ত্রীর হাত-পা থেতলে দিলো স্বামী

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ): নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভরণ-পোষণ দাবি করায় শারমিন আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর হাত-পা থেতলে দিয়েছেন তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে। 

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) রাতে রূপগঞ্জে উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  

বর্তমানে শারমিন আক্তারকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানার ভৈরব গ্রামের সাহিদ মিয়ার মেয়ে। সাহিদ পরিবার নিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণগাঁও এলাকার শহিদুল্লাহ মাস্টারের বাড়িতে ভাড়া থাকে।  

সাহিদ মিয়া বাংলানিউজকে জানান, তিনি বাদাম বিক্রি করে কোনো রকম সংসার চালিয়ে আসছেন। সাড়ে তিন বছর আগে দড়িকান্দি এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে সেলিম মিয়ার (২৫) সঙ্গে শারমিনকে বিয়ে দেন। অভাব-অনটনের মধ্যেও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে যৌতুক হিসেবে তিন ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫০ হাজার টাকা দেন তিনি। এক বছর পর তাদের সিয়াম নামে একটি ছেলে হয়। এর পর থেকেই সেলিম ও তার বাড়ির লোকজন শারমিনকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। সম্প্রতি তারা শারমিনকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় তারা শারমিনকে সন্তানসহ বাড়ি থেকে বের করে দেন।  

তিনি আরো জানান, এর পর সন্তান নিয়ে তাদের বাসায় ওঠেন শারমিন। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ও ছেলের ভরণ-পোষণের দাবিতে শ্বশুর বাড়ি যান শারমিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্বামী সেলিম ও শ্বশুর মোজাম্মেল তাকে ঘরে বন্দি করে রাখেন। একপর্যায়ে তাকে বেঁধে তার বাম হাত, দু’টি পা ছাড়াও শরীরের বেশ কিছু স্থান থেতলে দেন। পরে স্থানীয় লোকজন চিকিৎসক ডেকে আনলে চিকিৎসককেও বটি দিয়ে ধাওয়া করেন তারা।  

খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শারমিনকে উদ্ধার করে। তবে পুলিশ আসার  বিষয়টি টের পেয়ে নির্যাতনকারীরা পালিয়ে যান।  

স্থানীয়রা জানান, এর আগে ওই দম্পতির ছেলে সিয়ামের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আলম হোসেন তাদের মিলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তখন সেলিম তা মানেননি। এছাড়া এলাকার কেউ এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে সেলিম ও তার বাবা মোজাম্মেল বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দেন। এজন্য কেউ প্রতিবাদ করতে যায় না।  

এ ব্যাপারে কথা বলতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।  

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এটি একটি অমানবিক ঘটনা। এভাবে নির্যাতন করাটা ন্যাক্কারজনক। দ্রুত নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৭
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।