তিনি বলেছেন, এই ভাষণ নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ে দিক দর্শন, শক্তি যোগায়। এজকন বাঙালি এই ভাষণ দিয়েছেন এটা আজ বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাতে সংসদ অধিবেশনে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে সাধারণ আলোচনার জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ওই নোটিশে বলা হয়, ‘সংসদের অভিমত এই যে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় দেশ ও জাতির সঙ্গে আমরা গর্বিত এবং এজন্য ইউনেস্কোসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জাতীয় সংসদ ধন্যবাদ জানাচ্ছে। ’ ভাষণের আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় প্রায় ৫৭ জন সংসদ সদস্য প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়।
সবশেষে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে আমাদের অস্তিত্ব, আমাদের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। এই ভাষণের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের মানুষ উজ্জীবীত হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু ভাষণের শুরুতেই বলতেন ভাইয়েরা। এই কথা দিয়ে তিনি মানুষের সঙ্গে কতোটা মিশতেন তার প্রমাণ দেয়। সেই ভাষণের মধ্য দিয়ে শুধু স্বাধীনতাই আনেননি, অর্থনৈতিক মুক্তি এনেছিলেন। কি করতে চান সেটাও তার ভাষণে ছিলো। একটা জাতি হিসেবে গড়ে তোলার সব প্রয়োজনটাই ভাষণে ছিল। তিনি একদিকে ইতিহাস তুলে ধরেছেন, অপর দিকে অসহযোগ আন্দোলনে কি কি করতে হবে সেই নির্দেশনাও দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ৭৫’র সালে হত্যার পর ভাষণ নিষিদ্ধ হয়ে গেল বাংলাদেশে। যেখানে পাক সামরিক শাসন পারে নাই, সেখানে ৭৫’র পরবর্তী সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমাদের একটা প্রজন্মের জন্য দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত। তারা এই ভাষণ থেকে বঞ্চিত ছিলো।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্জকণ্ঠ নামে প্রতিদিন এই ভাষণ প্রচার করা হত, যা মুক্তিযোদ্ধাদের নতুনভাবে প্রেরণা জোগাত। শুধু মুক্তিযোদ্ধা নয় আমরা যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছে বন্দি ছিলাম, আমাদেরও উজ্জীবীত করতো। আমাদের কাছে একটা রেডিও ছিল। আমরা এই ভাষণ টুকু শোনার জন্য পাখির মতে বসে থাকতাম। আমাদের বেঁচে থাকার একটা বিরাট অবলম্বন ছিল ওই ভাষণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল ৭৫ এর পর। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি তো নয় মনে হচ্ছিলো স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে এসে ক্ষমতায় বসানো এবং তাদের নিয়ে দল করা তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করাটাই ছিল মূলক্ষ্য। পাকিস্তানি প্রেতাত্মারাই এখানে দেশ চালিয়েছে। যেকারণে জাতির পিতার নাম, তার ভাষণ তার কথা সবই তারা নষ্ট করে ফেলা। কিন্তু ইতিহাস সত্যকে তুলে ধরবেই। হাজার চেষ্টা করেও বন্ধ করা যায় না। সেটাই আজকে প্রমাণিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এসএম/বিএস