ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

১৪ বছর পর শুরু আ’লীগ নেতা সুরুজ হত্যার বিচার 

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৭
১৪ বছর পর শুরু আ’লীগ নেতা সুরুজ হত্যার বিচার 

লালমনিরহাট: লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সামসুল ইসলাম সুরুজ হত্যার ১৪ বছর পর বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ (চার্জ) গঠনের পর কয়েক দফায় পেছালেও আগামী বছরের ০৫ মার্চ হত্যা মামলাটির বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাব্বির ফয়েজের আদালতে।

আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) টানা ছয়বারের চেয়ারম্যান সুরুজকে ২০০৩ সালের ২১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে চড়িতাবাড়ি গ্রামের বাড়িতে ফেরার পথে নৃশংসভাবে হত্যা করেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শওকত আলী বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।

 

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চড়িতাবাড়ি গ্রামের মৃত কিসমত আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী ও আব্দুল খালেক সরকারের ছেলে আব্দুল মান্নান পূর্বশত্রুতার জেরে দলবল নিয়ে তাদের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সুরুজের পথরোধ করে ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে হত্যা করেন।

হত্যা মামলাটির তদন্ত করে আরো ৪ জনসহ মোট ২৩ জনকে আসামি চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। ওই আসামিদের সবার বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করলেও আসামি আব্দুল মান্নান ও তোতা মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। জীবিত ২১ আসামির সবাই জামিনে রয়েছেন।  

নিহত সামসুল ইসলাম সুরুজ লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন। দলের এ ত্যাগী নেতাকে হত্যার কয়েক দিনের মধ্যে তার পরিবারের সদস্যদের শান্ত্বনা জানাতে ছুটে আসেন আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিহত নেতার শোকাহত পরিবারকে সমবেদনার পাশাপাশি খুনিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। সুরুজের বড় ছেলে ইমরুল কায়েস ফারুকের লেখাপড়া থেকে সবকিছুর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। ফারুককে নিজের বাসায় রেখে লেখাপড়া শিখিয়ে বড়ও করেছেন তিনি।


বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) প্রয়াত এই নেতার প্রতিষ্ঠিত একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা, মিলাদ মাহফিল ও খুনিদের বিচার দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন ১৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত হয়েছে। আদিতমারী ডিগ্রি কলেজ মাঠে ছিল দিনভর নানা আয়োজন।  

নিহতের বড় ছেলে ইমরুল কায়েস ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, বিচার শুরু হতে দেরি হওয়ায় বেশ কিছু আলামত নষ্ট হতে বসেছে। সাক্ষীদের কেউ কেউ মারা গেছেন, কেউ কেউ আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যা মামলার বিচারিক কাজে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এরই মধ্যে দু’জন আসামিও মারা গেছেন।  

তবে বিলম্বে হলেও ন্যায়বিচার পাবেন বলে তারা আশাবাদী।

লালমনিরহাট আদালতের সরকারি আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট আকমল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিচারকের বদলিজনিত কারণে কয়েক দফায় পেছালেও আগামী বছরের ০৫ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। আশা করছি, সঠিক বিচার পাবো’।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
এএসআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।