ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

এবার জলাবদ্ধতামুক্ত হবে মৌলভীবাজার শহর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
এবার জলাবদ্ধতামুক্ত হবে মৌলভীবাজার শহর পুনঃখনন কাজ চলছে

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারে জলাবদ্ধতার প্রধান সমস্যা সমাধানে কোদালিছড়া পুনঃখননে স্বেচ্ছায় বাসার সীমানাপ্রাচীর ও ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে জমি ছাড়ছেন পৌরবাসী। এছাড়া খালখননে পৌর কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করছেন সাধারণ নাগরিকরা।

ফলে দখলমুক্ত হচ্ছে কোদালিছড়া। একই সঙ্গে এ ছড়াটিকে পর্যটনবান্ধব এলাকা করার দাবি উঠছে জোরালোভাবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের সুলতানপুর আবাসিক এলাকায় পৌর মেয়রের উপস্থিতিতে কোদালিছড়ার জায়গার ওপর স্থাপিত বিভিন্ন স্থাপনা স্ক্যাভেটর দিয়ে ভাঙা হচ্ছে। কোদালিছড়া দখলমুক্ত ও প্রশস্ত করতে প্রয়োজনীয় জায়গায় কারও বাসার সীমানাপ্রাচীর পড়েছে। কোথাও কবরস্থান, আবার কোথাও ঘরবাড়ি পড়েছে। এসব জায়গার মালিক ও দখলদাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন। আবার ছড়ার জায়গায় যেসব স্থাপনা ভাঙা পড়েছে, সেগুলোর মালিকই শ্রমিকদের কাজে সহযোগিতা করছেন। পুনঃখনন কাজ চলছে

বাসার মালিক পিয়ারা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, কোদালিছড়ার জমি উদ্ধারে পৌর মেয়রের উদ্যোগ ভালো লেগেছে। এই কোদালিছাড়া শহরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র রাস্তা। তাই এটি প্রশস্ত হলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে না। এমন চিন্তা থেকে আমার বাসার বাউন্ডারি ভেঙে জমি ছেড়ে দিয়েছি। খাল প্রশস্ত হলে সবার উপকার হবে। শহরবাসীর প্রয়োজনে আরো জমি ছাড়তে হলে, আমি ছাড়ব।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কোদালিছড়া দখলমুক্ত ও প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হওয়ার আগে স্থানীয়দের সঙ্গে মেয়র ফজলুর রহমান বৈঠক করে জমি ছাড়তে সম্মতি নিয়েছেন। এ পর্যন্ত শহরের কোদালিপুল এলাকা থেকে সুলতানপুর এলাকায় প্রায় শতাধিক স্থাপনা ভাঙা হয়েছে। এ সকল কাজে জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম ও পুলিশ সুপার শাহ জালাল সার্বিক সহযোগিতা করছেন। ধারাবাহিকভাবে শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সম্পূর্ণ খালটির জমি উদ্ধার করা হবে এবং এর সীমানা নিধারণ করে দেওয়া হবে।

মৌলভীবাজার পৌরসভার প্রবীণ নাগরিক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মনসুরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, এতোদিন ময়লা আবর্জনা পড়ে কোদালিছড়া সংকীর্ণ হওয়ার ফলে অল্প বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিতো। বর্তমানে যে পুনঃখনন কাজ চলছে, তাতে সঠিক প্রকৌশলগত সমাধান আনতে হবে। নদীর নিয়ম অনুযায়ী সেটিকে খনন করলে ও তার খোলা স্থানে গাইড ওয়াল নির্মাণ করতে পারলে খালটি আর ভরাট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

এদিকে, কোদালিছড়া দখলমুক্ত করে সেটাকে পর্যটনবান্ধব করার দাবি জানাচ্ছিলেন এলাকার সচেতন নাগরিকরা। খালটি পুনঃখনন কাজ শুরু হওয়ার ফলে সেই দাবি আরও জোরালো হচ্ছে। ইতোমধ্যে, পৌর মেয়র ও জেলা প্রশাসক শহরবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন ছড়াটি খননের পর তার দু’পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে এবং তাতে বিভিন্ন ধরনের ফুলের বাগান করা হবে। পুনঃখনন কাজ চলছে

কোদালিছড়া পুনঃখনন ও পর্যটনবান্ধব এলাকা করার লক্ষে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন সাংবাদিক হাসনাত কামাল। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, পৌর মেয়রের প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও বুদ্ধিমত্তার ফলে সম্পূর্ণ নিজস্ব খরচে এবং নিজস্ব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে কোদালিছড়ার পুনঃখনন ও দখলমুক্তকরণ কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদের দাবি এই কোদালিছড়ার দু’পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে শহরের মানুষের বিনোদনের সুযোগ করে দিতে হবে।

পৌর মেয়র ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রাথমিক অবস্থায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে খালটি উদ্ধার কাজে হাত দিয়েছি। শহরের মানুষের জলাবদ্ধতার সমাধানে শহরবাসীই আমাদের ডাকে এগিয়ে এসেছেন। খালটি পনঃখনন কাজ শেষ হওয়ার পর আমরা তার সীমানা নির্ধারণ কাজে হাত দেব’।

তিনি আরো বলেন, এই খালকে ঘিরে একটি পর্যটনবান্ধব এলাকা করার পরিকল্পপনা রয়েছে। আমাদের নিজস্ব ব্যয়ে চলমান কাজটি করছি। এর বেশি কিছু করার ক্ষমতা পৌরসভার নেই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আমরা একটি প্রস্তাবনা পাঠাব। সরকার আমাদের সহযোগিতা করলে মৌলভীবাজারবাসীর এই দাবিও পূরণ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
টিএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।