ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

স্মৃতির ফ্রেমে ধরে রাখতে হোলিতে সেলফি

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৮
স্মৃতির ফ্রেমে ধরে রাখতে হোলিতে সেলফি হোলি উৎসবে সেলফি তোলায় মগ্ন তরুণীরা/ ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: এক হাতে থালা। সেই থালায় রাখা নানা রং। আরেক হাতে মোবাইল ফোন। থালা থেকে রঙ উঠিয়ে ইচ্ছেমতো মাখিয়ে নিচ্ছেন মুখমণ্ডলে। আবার একে অপরকে সেই রঙ মাখিয়ে দিচ্ছেন। সবাই বাহারি রঙে রাঙিয়ে নিচ্ছেন নিজেকে। এভাবে সবাই আবিরের রঙে মেতে ওঠেন হোলি উৎসবে।

হোলি উৎসবে রঙের খেলায় শিশু-কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীসহ নানা বয়সী নারী-পুরুষকে দেখা যায়। আর আবিরের রঙে হোলি উৎসব স্মৃতির ফ্রেমে ধরে রাখতে সেলফিতে মেতে ওঠেন তরুণ-তরুণীরা।

বৃহস্পতিবার (০১ মার্চ) দুপুরে বগুড়া শহরের চেলোপাড়া নববৃন্দাবন হরিবাসর চত্বরে দেখা যায় রঙের উৎসব।

প্রচলতি মিথ অনুযায়ী, একদিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ রাধা খেলা করছিলেন তার সখীদের সঙ্গে। আচমকা রাধা এক বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। পাশাপাশি ভীষণ লজ্জায় পড়ে যান। রাধার লজ্জা ঢাকতে শ্রীকৃষ্ণ সখীদের নিয়ে আবির খেলা শুরু করেন। এ সময় সবাইকে আবিরে রাঙিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে হিন্দুধর্মালম্বীরা আবির খেলার স্মরণে হোলি উৎসব পালন করে আসছেন বলে প্রচলিত আছে।
হোলি উৎসবে সেলফি তোলায় মগ্ন তরুণীরা/ ছবি: আরিফ জাহানহোলি উৎসব মানেই রঙের খেলা। ছোটদের কাছে এ উৎসব বেশ রঙিনও বটে। আর মানুষের মনে যত রঙ আছে তা যেন ফুটে ওঠে আবিরের রঙে হোলি উৎসবের মধ্য দিয়ে। তাই সকাল থেকেই তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সী মানুষজন নেমে পড়েন রঙ হাতে। নিজেদের মাখিয়ে নেন নানা রঙে। পাশাপাশি পরস্পর আবিরের রঙে মেতে ওঠে সবাই। এ থেকে বাদ যায় না স্বজন ও প্রতিবেশীরাও। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাল্টাপাল্টি রঙের বিনিময় করে থাকেন সবাই।

বাসা বাড়ির ছাদ বা উঁচু স্থান থেকে মানুষকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় রঙ। কখনও পাশাপাশি আবার অনেক সময় অগোচরে একে অন্যকে রঙ মাখিয়ে শামিল করে নেয় এ উৎসবে। বালতি অথবা অন্য কোন বাসনে রঙ নিয়ে পাড়া মহল্লার রাস্তায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন তরুণরা। তরুণীরাও একেবারে কম যায় না। এভাবে চলতে থাকে দিনব্যাপী রঙের খেলা।

উৎসব ঘিরে বড়দের প্রণাম করেন ছোটরা। নেন আশীর্বাদ। রাধা গোবিন্দের পূজা অর্চনা হয় মন্দিরে মন্দিরে। উলুধ্বনি, কাঁসার ঘণ্টা আর পুরোহিতের ঘণ্টায় মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশটা। দিনব্যাপী চলে এসব অনুষ্ঠান। শ্রী শ্রী হরি লীলামৃত ও গুরু চাঁদ চরিতাপাঠ, কীর্তন, হরি সঙ্গীত ও মহাসঙ্গীত হয়ে থাকে হরিবাসর প্রাঙ্গণ আর মন্দিরে মন্দিরে।

সুস্মিতা, সুমি বসাক, করুণা রানী, পুষ্প রানী, আনন্দ কুমারসহ একাধিক তরুণ-তরুণী বাংলানিউজকে জানান, হোলি উৎসব মানেই আনন্দ মেতে ওঠা। সবাই মিলেমিশে দিনব্যাপী নানা রঙে নিজেকে রঙিন করে তোলা। বংশ পরম্পরায় এ উৎসব পালন করে আসছেন তারা। এবারও তার ব্যতয় ঘটেনি। সকাল থেকেই নিজেকে রঙিন করে তুলেছেন তারা। নানা রঙে অপরকেও রঙিন করে দিয়েছেন তারা। দৃশ্যগুলো সেলফির মাধ্যমে স্মৃতির ফ্রেমে বন্দি করেছেন মোবাইল ফোনের ক্যামেরার মাধ্যমে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৮
এমবিএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।