ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

উত্তেজনায় ঢাকা বারে ভোট গণনা বন্ধ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৮
উত্তেজনায় ঢাকা বারে ভোট গণনা বন্ধ

ঢাকা: বহিরাগতদের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনায় ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গণনা বন্ধ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০১ মার্চ) রাত পৌনে ১১টার দিকে ভোটগণনা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এছাড়া এ উত্তেজনায় বারের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুল মান্নান অসুস্থ হয়ে ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

খন্দকার আব্দুল মান্নানের গানম্যান সারওয়ার বাংলানিউজকে বলেন, চলমান এ পরিস্থিত সামাল দিতে উত্তেজিত হয়ে উচ্চস্বরে কথা বলার সময় হঠাৎ আব্দুল মান্নান বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এরপর দ্রুত তাকে পার্শ্ববর্তী ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখন সিসিইউতে আছেন।

সারওয়ার আরো বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার আগে থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। তার হার্টে রিং বসানো ছিল।

চলমান পরিস্থিতির জন্য ঢাকা বারের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরকে দোষারোপ করছে।

তবে প্রত্যক্ষদর্শী অ্যাডভোকেট জুয়েল বাংলানিউজকে বলেন, ভোট গণনায় আইনজীবী ছাড়া অন্য কারো উপস্থিতি নিষিদ্ধ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোট গণনার সময় আইনজীবী নন এমন বিএনপিপন্থী একজন অহেতুক ভোট গণনা চ্যালেঞ্জ করলে, তাকে মামলার ভয় দেখিয়ে নির্বাচন কমিশনে আটকে রাখা হয়।

কিছুক্ষণ পর বিএনপি সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী গোলাম মোস্তফা খান ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া তাকে ছেড়ে দিলে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এসময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হোলি উৎসব উপলক্ষে বাইরে ঢাকের বাড়ি পড়লে  বিএনপিপন্থীরা মনে করেন আওয়ামী লীগ বোমাবাজি করছে, আর আওয়ামী লীগ মনে করে শিবির বোমাবাজি করছে। এতে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। তখন আইনজীবী সমিতির প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে সাধারণ আইনজীবীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়ে ওঠে।

এ পরিস্থিতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার খন্দকার আব্দুল মান্নান দু’পক্ষকে শান্ত করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়ে ভোট গণনা স্থগিত করে দেন। এসময় তিনি হার্টে ব্যথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে ‘এশিয়ার বৃহত্তম বার’ খ্যাত ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০১৮-১৯ মেয়াদের নির্বাচনে মঙ্গল ও বুধবার দুই দিনব্যাপী ভোট গ্রহণ হয়।

প্রথম দিন ৩ হাজার ৬৫২ ভোটার এবং দ্বিতীয় দিন ৫ হাজার ৩৫৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে দুই দিনে মোট ৮ হাজার ৯১১টি ভোট পড়ে।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে ‘সাদা প্যানেল’ এবং বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের ব্যানারে ‘নীল প্যানেল’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

২৭টি পদের বিপরীতে মোট ৫৫ জন প্রার্থী লড়ছেন এবারের নির্বাচনে। বড় দুই প্যানেলের বাইরে সদস্য পদে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে নিবন্ধিত আইনজীবীর সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার ২৪ জন হলেও বৈধ ভোটারের সংখ্যা ১৬ হাজার ১২৯ জন।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৮
এমআই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।