ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মশার উপদ্রবে আবারও চিকুনগুনিয়া আতঙ্ক

মাসুদ আজীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৮
মশার উপদ্রবে আবারও চিকুনগুনিয়া আতঙ্ক দূষিত ধানমন্ডি লেকের পানি। এতে মশার বংশবৃদ্ধি আরও বাড়ছে/ ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: শীতের প্রকোপ কমার পর থেকেই মশার উপদ্রব বেড়েছে রাজধানীতে। মশার উপদ্রবে বাসাবাড়িসহ কর্মস্থলে অবস্থান করাটা এক প্রকার অত্যাচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই অতিরিক্ত মশার কারণে আবারও চিকুনগুনিয়ার আশঙ্কায় রয়েছে নগরবাসী।

বাসায় মশারি টাঙিয়ে বা কয়েল জ্বালিয়ে কিছুটা সুবিধা করা গেলেও কর্মস্থলে বসে চরম বিপাকের সম্মুখীন হতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে।  

বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) ধানমন্ডি এলাকায় ঘুরে জানা গেছে, এই এলাকায় মশার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল ধানমন্ডি লেক।

লেকের পাড়ে ময়লা-আবর্জনার স্তূপে ভর্তি। এ কারণে লেকের আশপাশে যাদের বাস তারা মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ।
ধানমন্ডি লেকের পাড়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে/ ছবি: বাংলানিউজ
ধানমন্ডির জিগাতলার বাসিন্দা আকবর আলী জানান, ঢাকায় শীত শেষে গরম নামে অনেক দ্রুত। আর গরমে দরজা-জানালা খুলে রাখা হয়। কিন্তু দরজা-জানালা খোলা রাখলেই মশার কারণে বাসায় অবস্থান করা কষ্টকর হয়ে যায়। দিনের যে সময়ই হোক মশার জন্য কয়েল জ্বালিয়ে আবার সন্ধ্যার পর মশারি টাঙিয়ে বসে থাকতে হয়। ছেলেমেয়েরা এখন পড়াশোনা করে খাটে মশারির ভেতরে। আর সিটি কর্পোরেশনের মশার ওষুধে কোনো কাজ হয় না। মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে দরকার এর উৎপত্তিস্থল নষ্ট করা।

ধানমন্ডি ২৭ নম্বর এলাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাফিজ উদ্দীন বলেন, বাসায় কয়েল জ্বালালেও মশার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। আর এদিকে অফিসে এসির মধ্যে তো কয়েল জ্বালানো যায় না। আবার কাজেও ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই মশা এখানে শান্তিতেই তাদের কাজ চালাতে পারে! অ্যারোসলেও কাজ হয় না। আবার চিকুনগুনিয়া হয়ে যায় কিনা এই আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছি।

এদিকে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের মতামত, ধানমন্ডি লেকে আসা দর্শনার্থীদের জন্যই লেক দূষিত হচ্ছে এবং মশার আদর্শ জন্মস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে।
ময়লার ডাস্টবিনের আশপাশে ময়লা পড়ে আছে/ ছবি: বাংলানিউজঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকির হোসেন স্বপন বাংলানিউজকে জানান, লেকটাকে সবাই ময়লার স্তূপ হিসেবে ব্যবহার করে। জনগণ সচেতন না হলে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব নয়। আমরা নিয়ম করে মশার ওষুধ ছিটিয়ে যাচ্ছি। লেকও পরিষ্কার করছি। কিন্তু তাতেও লাভ হচ্ছে না। আর লেকের সব জায়গায় জনসচেতনতামূলক সাইনবোর্ড ও ব্যানার আমরা কম ব্যবহার করছি। কেননা তাতে করে এই বিনোদন কেন্দ্রটির পরিবেশ নষ্ট হবে।
 
ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকার ময়লার ডাস্টবিনগুলোর অবস্থাও খুব করুণ। যে এলাকায় ডাস্টবিন রয়েছে তার অনেক দূর থেকেই ময়লার গন্ধ পাওয়া যায়। প্রতিদিনের ময়লা প্রতিদিন নেওয়া হয় না। আর এ কারণেই দুর্গন্ধ ও মশার বংশবৃদ্ধির স্থান সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।  
 
ময়লা প্রতিদিন সরিয়ে নেওয়া হয় জানিয়ে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. শফিকুল আলম বলেন, ময়লা মানুষ রাতে বা সকালে ফেলে। আমরা দিনে রাস্তার পাশে থাকা কন্টেইনারগুলো একবার পরিষ্কার করে ফেলি। এই সময়ের মধ্যেই দেখা যায় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে আমাদের কড়া নজরদারি রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৮
এমএএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।